পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (তৃতীয় ভাগ).pdf/৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○○ সাহিত্য-পরিষদ-পত্রিকা । [ বৈশাখ। মাইকেল মধুসূদন দত্তের মানসক্ষেত্র এইরূপ সমুজ্জ্বল আলোক এবং এইরূপ গভীর অন্ধকারের বিকাশস্থল ছিল। পৃথিবীতে লোকে যাহা পাইলে আপনাকে ভাগ্যবান বলিয়া মনে করিয়া থাকে, মধুসূদনে তাহার অভাব ছিল না। মধুসুদন সঙ্গতিপন্ন গৃহস্থের পুত্র। র্তাহার পিতা সদর দেওয়ানী আদালতের এক জন প্ৰসিদ্ধ উকীল । তাহার মাতা একজন ধনাঢ্য ভূম্যধিকারীর কন্যা। তঁহার সংসারে কখনও কোনও বিষয়ের অভাব ছিল না । তিনি যেরূপ সবল ও সুস্থ, সেইরূপ বুদ্ধিমান, মেধাবী ও শ্রমশীল ছিলেন। তাহার প্রশস্ত ললাট, জ্যোতিৰ্ম্ময়, আয়ত, লোচনযুগল, উন্নত নাসিকা, কুঞ্চিত কেশ, সুনিপুণ চিত্রকর বা সুদক্ষ ভাস্করের গুণগৌরব প্রকাশের বিষয়ীভুত ছিল। তাহার হৃদয়ের কোমল বৃত্তির্তাহার মেহ, দয়া, পরোপকার এক জন ভাবুক কবির ভাবময়ী কবিতার অযোগ্য উপাদান ছিল না। কিন্তু কোমল বৃত্তির পার্শ্বে যে নিবিড় কালিমা ছিল, তাহা দেখিলে পথের এক জন ভিক্ষুকও ঘূণায় ও লজ্জায় মুখ বিকৃত এবং নাসিক সন্ধুচিত করিতে কুষ্ঠিত হইত না। নিৰ্ম্মল কোমল ভাবের পার্শ্বে এইরূপ ঘূণিত পঙ্কিল ভাব, উজ্জ্বল আলোকের পাশ্বে এইরূপ গভীর অন্ধকারের অস্তিত্ব যে, নিরতিশয় বিস্ময়জনক, তদ্বিষয়ে সন্দেহ নাই । কিন্তু মধুসূদনে এইরূপ বিভিন্নলক্ষণাক্ৰান্ত, বিস্ময়াবহ ব্যাপারের আবির্ভাব ঘটিয়াছিল। ঘটনা যেরূপ বিস্ময়া বহ, সেইরূপ শোকোদ্দীপক। কিন্তু যখন মধুসূদনের বাল্যকালের শিক্ষা, উচ্ছঙ্খলভােব, বিজাতীয় রীতি ও বিজাতীয় ভাবের অনুকরণ প্রবৃত্তি মনে হয়, তঁহার সংযমশিক্ষায় তদীয় মাতাপিতার ঔদাস্ত্য ও অযত্ন যখন স্মৃতিপথে উদিত হইয়া থাকে, তখন বিস্ময়ের আবেগ মন্দীভূত হয় বটে, কিন্তু শোকের উচ্ছাস কখনও অল্প হয় না। মাতৃভাষানুরাগী সহৃদয় ব্যক্তিগণ চিরকাল মাতৃভাষার সেবক প্ৰতিভাশালী কবির জন্য শোক শুরু পাত করিবেন । মধুসুদন সপ্তম বৰ্ম্ম বয়সে স্বকীয় আবাসপল্লী সাগরদাড়ীতে গুরুমহাশয়ের পাঠশালায় বিদ্যা ভ্যাসে প্ৰবৃত্ত হয়েন । সে সময়ে গুরুমহাশয়ের পাঠশালা বালকদিগের ভীতিস্থল ছিল । যখন বেত্ৰধারী গুরুর ভীষণমূৰ্ত্তি তাহদের মনে উদিত হইত, তখনই তাহারা আতঙ্কে অধীর হইয়া উঠিত। তাহারা গুরুকে শিক্ষাদাতা বলিয়া যত ভক্তি করুক বা না করুক, যমদূত বলিয়া শতগুণে ভয় করিত। অনেকেই এই যমদূতের ভয়ে আত্মগোপন করিত। অনেকে ইহার প্রসন্নতাবিধান জন্য নানাবিধ সুখাদ্য দ্রব্য আনিয়া দিত। অনেকে ইহার ভীষণ আক্ৰমণ হইতে পরিত্রাণ পাইবার আশায় বালক হইয়াও তোষামোদকারী বাকচতুরের ন্যায় অলীক স্তুতিবাদে প্ৰবৃত্ত হইত। কিন্তু মধুসূদন কখনও গুরুকে যমদূত বলিয়া আতঙ্ক প্ৰকাশ করেন নাই। তিনি ঐশ্বৰ্য্যশালী ব্যক্তির একমাত্র পুত্র ; স্নেহপরায়ণা জননীর অপরিসীম স্নেহ ও প্রীতির অদ্বিতীয় অবলম্বন। দাসদাসীগণ নিরস্তর তাহাব পরিচর্য্যার জন্য নিয়োজিত থাকিত। পিতৃগৃহের কৰ্ম্মচারিগণ তঁহাকে নিরন্তর SDkD 0 StCSYS BBBBD BY BDD K DDD করিত। তঁহার পিতা এই সময়ে ওকালতীর