পাতা:সিরাজদ্দৌলা - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়.pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৩০
সিরাজদ্দৌল্লা।

 সেকালে এ দেশের লোকের যেরূপ সরল প্রকৃতি ছিল, তাঁহাতে তাঁহারা ইংরাজদিগের অধ্যবসায়, অকুতোভয়তা এবং বিদ্যাবুদ্ধির পরিচয় পাইয়া নিঃসন্দেহে বিশ্বাসস্থাপন করিয়া ইংরাজের পক্ষপাতী হইয়া পড়িয়াছিলেন। তজ্জন্য ইংরাজের পথ কিছু সুগম হইয়া উঠিয়াছিল।

 সিরাজদ্দৌলা ইংরাজদিগকে চিনিয়াছিলেন। রাজকার্য্যে লিপ্ত হইয়া ইংরাজের কুটিল নীতির পরিচয় পাইয়া সিরাজদ্দৌলার ইংরাজবিদ্বেষ বদ্ধমূল হইয়া উঠিয়াছিল। ইংরাজেরা নবাবের অনুমতি না লইয়া দুর্গসংস্কারে হস্তক্ষেপ করিয়াছিলেন; এবং পলায়িত কৃষ্ণবল্লভকে পরম সমাদরে কলিকাতায় আশ্রয়দান করিয়াছিলেন;— ইহাতে সিরাজদ্দৌলার ক্রোধাগ্নিতে ঘৃতাহুতি পতিত হইয়াছিল। তিনি সিংহাসনে পদার্পণ করিবামাত্র বৃদ্ধ মাতামহের অন্তিম উপদেশ[১] স্মরণ করিয়া ইংরাজদিগকে শাসন করিবার জন্য তাহাদের কাশিমবাজারের “গোমস্তা” ওয়াট্‌স্ সাহেবকে ডাকিয়া পাঠাইলেন।

 ওয়াটস সাহেব উপনীত হইলে, সিরাজদ্দৌলা কোন কথা গোপন করিলেন না;—তাহাকে পরিষ্কার করিয়া বুঝাইয়া বলিলেন যে, “আমি তোমাদের ব্যবহারে মোটের উপর বড়ই অসন্তুষ্ট হইয়াছি। শুনিলাম যে, তোমরা নাকি আমার অনুমতির অপেক্ষা না করিয়াই কলিকাতার নিকটে দুর্গ নির্মাণ করিতেছ? আমি কিছুতেই এরূপ কার্যের প্রশ্রয় দিতে পারিব না। আমি তোমাদিগকে বণিক বলিয়াই জানি,—

  1. His last advice to his grandson was to deprive the English of military power.-Holwell's Tracts.