যে, তাহাতে তিন দিনের অধিক আত্মরক্ষা করা সম্ভব হইত না। সত্য বটে, আগ্নেয়াস্ত্রের অভাব ছিল না, কিন্তু তাহার অধিকাংশ কেবল চক্রহীন গতিহীন অবস্থায় ভগ্নকলেবরে প্রাচীরমূলে পড়িয়া থাকিত;—সেগুলি ব্যবহার করিবার উপায় ছিল না।[১] কেল্লার অবস্থা সত্য সত্যই এরূপ শোচনীয় হইলে, তাঁহাদের আর অপরাধ কি? কিন্তু যাঁহাদের কেল্লা এরূপ জরাজীর্ণ, “রসদ” এরূপ অপ্রচুর, অস্ত্রশস্ত্র এরূপ অকর্মণ্য,—তাঁহারা যে কোন্ সাহসে সিরাজদ্দৌলার বিপুল সেনাতরঙ্গের সম্মুখে বুক বাঁধিয়া দণ্ডায়মান হইয়াছিলেন, কেহই সে কথা মীমাংসা করিবার চেষ্টা করেন নাই!
কলিকাতার দক্ষিণাংশে মহারাষ্ট্র-খাত সম্পূর্ণ হয় নাই; চারিদিকে যেরূপ বিজন বন, তাহাতে নবাব-সেনা হয় ত সে পথের সন্ধান জানিত না। সুতরাং তাহার নগরের উত্তরাংশে বরাহনগরে শিবিরসন্নিবেশ করিয়া বাগ বাজারের পথেই নগর-প্রবেশের আয়োজন করিতে লাগিল।
১৮ই জুন-প্রাতঃকালে নবাব-সেনা কামানে অগ্নিসংযোেগ করিল।[২] ইংরাজ-সেনা সবিশেষ দৃঢ়তার সঙ্গে তাহাদিগের আক্রমণবেগ প্রতিহত করিবার জন্য জলস্থল বিকম্পিত করিয়া জাহাজ হইতে এবং পেয়িং নামক দুর্গপ্রাকার হইতে যুগপৎ গোলাবর্ষণ করিতেছিল; সুতরাং নবাবের সিপাহী-সেনা সহজে বাগবাজারের দিকে অগ্রসর হইতে