লুটপাট ক'রে, রেল-লাইন তুলে, ইস্কুল-কলেজ পুড়িয়ে আমাকে খুন করবার চেষ্টা করছিল, এ তারই দাগ। তারা প্রথম প্রথম আমার ভাল হবে বলে আমার নিজের ছেলেদেরও দলে টেনেছিল, কিন্তু তারা প্রায় সবাই তাদের ভুল বুঝেছে, তাই এখন ক্রমশ আমার ঘা শুকিয়ে আসছে। তোমরা খুব সাবধান! •••এদের চিনে রাখ; আর কখনো এদের ফঁদে পা দিও না আমাকে খুন করতে...
জয় আর একবার বাংলার দিকে ভাল করে তাকায়, ঠিক যেন কলকাতার মরে মরে ভিখিরীর মতো চেহারা হয়েছে। হঠাৎ পায়ের দিকে তাকিয়েই সে চীৎকার করে ওঠে: এ কী?
দেখে পা দিয়ে অনর্গল রক্ত পড়ছে।
—তোমার এ অবস্থা কে করলে?
হঠাৎ বাংলার ক্লান্ত চোখে বিদ্যুৎ খেলে গেল, বললে:—জাপান।
•••খিদের হাত থেকে যদিও বা বাঁচতুম, কিন্তু এর হাত থেকে বোধহয় বাঁচতে পারব না...
জয় বুক ফুলিয়ে বলে: আমরা, ছেটরা থাকতে তোমার ভয় কী?
—পারবে? পারবে আমাকে বাঁচাতে? বাংলা দুর্বল হাতে জয়কে কোলে তুলে নিল।
বাংলার কোলে উঠে জয় আবেগে তার গলা জড়িয়ে ধরল।
—তুমি কিছু ভেব না। বড় কিছু না করে তো আমরা আছি।
বাংলা বলে: তুমি যদি আমাকে বাঁচাতে চাও, তা হলে তোমায় সাহায্য করবে, তোমার পাশে এসে দাড়াবে, তোমার মজুর কিষাণ ভাইরা। তারা আমায় তোমার মতোই বাঁচাতে চায়, তোমার মতোই ভালবাসে। আমার কিষাণ ছেলেরা আমার মুখে দুটি অন্ন দেবার জন্যে দিনরাত কী পরিশ্রমই না করছে; আর মজুর ছেলেরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলছে আমার কাপড় যোগাবার জন্যে।