বার সখ ওর কিছুতে মিটতে চায় না। শ্যামবাজারের মোড়ে কান পেতে থাকে ট্রামের বাসের ঘড়ঘড়ানিতে, টিটেগড়ের চটকলের দারোয়ানের সঙ্গে ভাব করে নিয়েছে তার ঘরে বসে কলের গর্জ্জন শুনে ওর চোখ বুজে আসে। ঠোঙায় করে রসগোল্লা আর আলুর দম নিয়ে বার্ণ কোম্পানির কামারের দোকানে বসে খেতে যায়। বন্দুকের তাক অভ্যেস করতে গোরা ফৌজ গেছে দমদমে, ও তারি ধুম্ ধুম্ শব্দ শুনছিল আরামে, টার্গেটের ওপারে ব’সে। আনন্দে আর থাকতে পারলে না, টার্গেটের এধারে মুখ বাড়িয়ে দেখতে এসেছে, লাগল একটা গুলি ওর মাথায়। -বাস্।
বাস্ কী দাদামশায়।
বাস্ মানে সব গল্প গেল একদম্ ফুরিয়ে।
না, না, সে হোতেই পারে না। আমাকে ফাঁকি দিচ্চ। এমন ক’রে তো সব গল্পই ফুরোতে পারে।
ফুরোয় তো বটেই।
না সে হবে না কিছুতেই। তারপরে কী হোলো বলে।
বলো কী—মরার পরেও।
হাঁ মরার পরে।
তুমি গল্পের সাবিত্রী হয়ে উঠলে দেখছি।
না, অমন ক’রে আমাকে ভোলাতে পারবে না, বলো কী হোলো।
আচ্ছা বেশ।—
লোকে বলে মরার বাড়া গাল নেই। মরার বাড়াও গাল আছে সেই কথাটা বলি তবে।—ফৌজের ডাক্তার ছিল তাঁবুতে, মস্ত ডাক্তার সে। সে যখন খবর পেলে মানুষটা মগজে গুলি লেগে মরেছে, বিষম খুসি হয়ে লাফ দিয়ে চেঁচিয়ে উঠল—হুর্রা।
খুসি হেলো কেন।