পাতা:হারানো খাতা - অনুরূপা দেবী.pdf/১২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ

হাসি খেলার অভিনয়ে অশ্রুজলে ঢাকি,
ভেবেছিলাম এম্‌নি করে তােমায় দিব ফাঁকি।
বুকে আমার যে সুর বাজে, গুঞ্জরে যা মর্ম্মমাঝে
ভেবেছিলাম সুখের সাজে রাখব তারে ঢাকি।

—৺ইন্দিরাদেবী

 পড়াশােনা চুকাইয়া দিয়া নিরুপদ্রব শান্তি উপভােগ করিতে করিতে একদিন পরিমল হঠাৎ চমকভাঙ্গা হইয়া আবিষ্কার করিয়া ফেলিল যে নরেশের মুখ আজকাল বেজায় গম্ভীর হইয়া আছে এবং তিনি ইদানীং তাঁহার বিদ্যা শিক্ষা বিষয়ে একেবারেই নির্লিপ্ত হইয়া পড়িয়াছেন। পরিমল যুক্তি দিয়া স্থির করিল যে ওটা ঠিক বৈরাগ্য নহে, ক্রোধই হইতেছে উহার উচিত অভিধান। নিরঞ্জনের ছাত্রাবস্থা হইতে ছুটী লওয়ায় তিনি তাহার উপর এবার একটু বিশেষ ভাবে চটিয়াছেন। স্বামীর ক্রুদ্ধ তিরস্কারকে সে অত্যাচার বােধ করিয়া মনে মনে নিজেও রাগ করিত, অভিমান করিত; কিন্তু তাহার নিছক ভয় ছিল তাহার ওই নিস্তব্ধ ক্রোধের মৌন অভিনয়কেই। সে জানিত, মনের ভিতর হইতে রাগ না করিলে তেমনটা প্রায়ই ঘটিত না। যেহেতু সমস্ত উদার স্বভাবের লােকের মতই নরেশের মনে বড় অল্পেই আঘাত লাগে। পরিমল ভয় পাইল।

 ‘কর্ণধার’ প্রেসের ম্যানেজার গাদাখানেক কাগজপত্র লইয়া আসিয়া অনেকক্ষণ ধরিয়া কি সব তর্কাতর্কি করিয়া এই সবে মাত্র চলিয়া গিয়াছেন। নরেশের একখানা ‘তরুণ’ নামক মাসিক পত্র এবং একখানা ‘নবীন জগৎ’ নামক সাপ্তাহিক ছিল। এই সাপ্তাহিকের সম্পাদকীয়