পাতা:হারানো খাতা - অনুরূপা দেবী.pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হারানো খাতা।
১২৫

 “অভক্তিই বা কবে ছিল? ভক্তিভাজনকে ভক্তি করব না?” বলিয়া পরিমল স্বামীর আদরটুকু নিঃশেষে উপভোগ করিয়া লইল। নরেশ তাহার ললাটে চুম্বন করিয়া হাসিমুখে বলিলেন—“আমি বলবো, কেন প্রণাম পেলুম?”

 পরিমল বলিল “বল তো দেখি কেমন বল্‌তে পার?”

 “আদর খাবার জন্যে।”

 “যাও, হ্যাঁঃ,—তা বই কি? আমি এক্ষুনি চলে যাব।” পরিমল এই অনুযোগ জানাইলেও নিজের পাওনা গণ্ডী ছাড়িয়া যাইবার কোন ত্বরা দেখাইল না।

 “তা’হলে নিরঞ্জনের চেলাগিরি ছাড়িয়ে দিয়েছি বলে? ঠিক কি না?”

 “না, তাও না।—ভাল কথা! নিরঞ্জন তোমার কাজ করছে কেমন বল তো?”

 “চমৎকার! নিরঞ্জন যে এতটাই বিদ্বান তা আমি কখন মনেও করতে পারিনি। ইংরাজীতে, বাংলায়, হিসাবে পত্রে, সকল দিক থেকেই ওর সমান শক্তি। বি, এ, এম, এ, পাশ না করলে কখনই অমন হতে পারে না,অন্ততঃ অতদুর পড়াও চাই। কে জানে ওর কি রহস্য! একি কোন দিনই জাতে পারা যাবে না?”

 কথাগুলো নরেশচন্দ্র পরিমলের চেয়ে বোধ করি নিজের মনকেই শুনাইতে চাহিয়া বলিলেন।—

 “যতই ওকে দেখ্‌ছি ততই যেন নূতন নূতন বিস্ময়ে স্তম্ভিত হয়ে যাচ্চি। ও যেন একটা জীবনযুক্ত সারনাথ বা সাঁঞ্চির ভগ্নস্তূপ। বাহিরেরটা সব মাটির ঢিপি হয়ে গেছে। কিন্তু যতই খুঁড়ে তোল, অভিনব অভিনব ভাস্কর্য্যের আবিস্কারে মন যেন বিস্ময় সাগরে কুলহারা