পরিমল দেহ ঋজু ও মস্তক উন্নত করিয়া দাঁড়াইয়া উঠিয়া উজ্জ্বল চোখের তীক্ষ্ণদৃষ্টি স্বামীর মুখে নিঃসঙ্কোচে তুলিয়া ধরিল, স্পষ্টস্বরে কহিল, “তার অপরাধ এতই প্রবল যে তাকে দেওয়া ভালবাসা ফিরিয়ে নেওয়া অসম্ভব বোধে তুমি আমার মত তুচ্ছকেও তুচ্ছ বোধ করতে পারো নি। কিন্তু সেইখানেই মস্ত বড় ভুল করেছিলে। রাজার মেয়েরও যেমন, ভিখারীর মেয়েরও তেম্নি, মন বলে একটা স্বতন্ত্র পদার্থ বুকের ভিতরে একই রকম ভরা আছে। তুমি যাকে ভালবাস, তাকে আমার পাশে বসে ভালবাসবার সুযোগ আমি তোমায় কিছুতেই দিতে পারবো না। যদি তাকে এ বাড়ীর কর্ত্তৃত্ব দেবে বলেই স্থির হয়ে থাকে, তাহলে হুকুম করো আমিই না হয় বাগানে গিয়ে থাকিগে। এক বাড়ীতে ভদ্র কন্যার আর পতিতার মেয়ের থাকা চলবে না।”
নরেশকে একেবারেই স্তম্ভিত বাক্যহীন দেখিয়া নিজের উগ্দতা অশ্রু কোন মতে সম্বরণ করিয়া লইয়া রোষক্ষুব্ধ ও উচ্ছ্বসিতস্বরে পুনশ্চ কহিল, “কিম্বা বাগানও যদি তার হাওয়া খাবার জন্যে দরকার পড়ে যায়, কাজ নেই আমায় তা দিয়ে। তার চাইতে দেশের বাড়ীতে নতুন মায়ের কাছে আমায় বরং পাঠিয়ে দেবার ব্যবস্থা করে দাও, আর ততক্ষণের জন্যে শুধু তোমার তাঁকে—”
নরেশ একট। সুদীর্ঘতর নিশ্বাস মোচন করিয়া উঠিয়া দাঁড়াইয়া ক্ষুব্ধ কণ্ঠে কহিলেন, “পরিমল! বিপন্ন আশ্রয়ার্থীকে তোমার দয়ার মধ্যেই সঁপে দিতে চেয়েছিলেম, সেটা এমনভাবে নেবে জান্লে সে চেষ্টা করতেই আসতেম না। ভাল, তাকে একবারটা নিজের চোখেই দেখ,—ভাল মন্দ লোক তো চোখে দেখেও অনেকটা আন্দাজ পাওয়া যায়। ডাকি তাকে?”
পরিমল দু’হাত তুলিয়া দু’চোক ঢাকিয়া মাথা নাড়িল—“আমার