পাতা:হারানো খাতা - অনুরূপা দেবী.pdf/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দ্বাবিংশ পরিচ্ছেদ

তখন রমণী কাঁদিয়া পড়িল সাধুর চরণমূলে।
কহিল পাপের পঙ্ক হইতে কেন নিলে মোরে তুলে?

—কথা।

হে অনন্ত জ্যোতির্ম্ময় বুঝিবে কি তুমি!
কি মহান্ দিব্য সুখে মগ্ন রহি আমি।
সাধকে কি সিদ্ধি তরে, ইষ্টদেবে পূজা করে,
শুধু কি পূজায় তৃপ্তি হয় নাক তার?
চির সাধনার সিদ্ধি পূজাতে আমার।

জান না আমায় আমি জানতে না চাই।
আমি যেন যুগে যুগে এই সুখ পাই।

৺ইন্দিরা দেবী।

 নীচের তলার একটা ঘরে সুষমা একাকিনী মেজের উপর নিতান্ত অবসন্ন হইয়া যেন একগাছি ছিন্ন লতিকার মতনই বসিয়া পড়িয়াছিল। রাজা নরেশচন্দ্রের এই সুবিপুল ও ঐশ্বর্য্যমণ্ডিত প্রাসাদ ভবনে প্রবেশ করিয়াই তার সমস্ত মনটা যেন লজ্জায় অনুতাপে সঙ্কোচে ও ধিক্কারে গুটাইয়া অত্যন্ত ছোট হইয়া গিয়াছিল। আকস্মিক ও নিরুপায়তার ভয়ের তাড়নায় সে কানাই সিংয়ের প্রস্তাবিত এই কাজটা করিয়া ফেলিবার পরক্ষণ হইতেই তার মনের মধ্যে কিসের একটা অস্বস্তির ঝড়, তুফান তুলিয়া আছড়াইয়া পড়িতেছিল। নিশ্চিন্তে নিদ্রিত গৃহস্থের সুখনিদ্রার অবসরে তাহাকে হৃতসর্ব্বস্ব করণোদ্দেশ্যে চৌর্য্যবৃত্তি করিতে আসিয়াছে এম্‌নি একটা দ্বিধা ও আতঙ্ক যেন তাহার লোভের মধ্য