পাতা:হারানো খাতা - অনুরূপা দেবী.pdf/২১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
হারানাে খাতা।
২০১

 “সুখদারা রয়ে গেল, আমি চাকরীর জন্য খোঁজ খবর করে বেড়াচ্চি আরও দুটো একটা পাশ টাস দেবারও ইচ্ছে আছে, বিয়ের জন্য সুখদার মা ছাড়া আর কারু যে বিশেষ কোন ত্বরা আছে তারতো কোন লক্ষণই দেখিনে। আমার হ্যাঁ, তা আমার যে একেবারেই ছিলনা, তাও বলতে পারিনে, আবার ছিলই যে তাও বলবার ভরসা আমার নেই। বিয়ে জিনিষটা সম্বন্ধে খুব বেশী তলিয়ে আমি কোন দিনই ভাবিনি। গোটা কয়েক পাশ করার সঙ্গে ও’ও যেন একটা দায় চোকান। কিন্তু সুখদাকে আমার ভালই লাগছিল। ভালবাসা একে বলতে হয় বলো, আরতো কখনও ভালবাসিনি, কাজেই ও নিয়ে তর্ক আমি কতে পারবে না, তবে ভালবাসার বর্ণনা যেখানে যত পড়েছি, তাদের সঙ্গে এ ভালবাসার সম্পর্কটা বড় বেশীই অল্প। সুখদা থাকে মার অন্তঃপুরে আমি থাকি হয় সদর বাড়ীতে না হয়ত কলকাতায়। বাড়ীর মধ্যে গেলে কখন কখন সুখদাকে এক আধবার দেখতে পাই। একটু গম্ভীর গম্ভীর চালে সে হয়ত মায়েদের দুজনের পূজোর যোগাড় করছে, না হয়ত পান সাজবার সরঞ্জাম নিয়ে বসে গেছে, মধ্যে মধ্যে পড়তে বসে মা তাকে ‘বোকামেয়ে’ বলে অনুরাগ করছেন, তা’ শুনতে পেয়ে হাসি চেপে আমি বাইরে পালিয়ে এসে হেসে ফেলেছি। আহা, মা আমার ওপর যা খুসী হচ্চেন, ‘গাধা পিটে ঘোড়া বানানো’ মুখের কথাটীতো নয়! সুখদার মেধা জিনিষটা বড্ডই নাকি কম! অন্ততঃ মার ত সেই রকমই বিশ্বাস!

 “বেশী দিন গেল না। বাবার চাকরী, তাঁর অসময়ে মৃত্যুর সুপারিসে আমি নাকি পেতে পারতুম, কিন্তু ইচ্ছা হলোনা সেটাকে কাজে লাগাতে। তা’ভিন্ন সেই সবজজবাবু নাকি আমার সম্বন্ধে সরকারের কান ভারী করে রেখেছেন এম্‌নি একটা, গুজবও শোনা গেল। আমি নিজের টাকা দিয়ে একটা আয়ুর্ব্বেদিক ঔষধের দোকান খুলে বস্‌লেম। দেশে এক