পাতা:বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয় (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রাচীন গদ্য-সাহিত্য—মৃত্যুঞ্জয়ের প্রবোধ-চন্দ্রিকা—১৮১০ খৃঃ । সম্পূর্ণ মৃদ্ভাণ্ড আনিয়া ব্রাহ্মণের সম্মুখে রাখিয়া কহিল মহাশয় জলপান করুন। ব্রাহ্মণ কহিলেন তুই ম্লেচ্ছ তোর স্পৃষ্টোদক পান আমি করিব। ম্লেচ্ছ বলিল মহাশয় এ কি আমাদের পাক করা অন্ন খাইতে পারিলেন ছোয়া জল খাইতে কি। ব্রাহ্মণ কহিলেন ওরে তখন যদি আমি আহার না করিতাম তবে আমার জীবন থাকিত না এক্ষণে আমার প্রাণ রক্ষা হইয়াছে তবে কেন তোর স্পৃষ্ট জল পান করিব। প্রাণরক্ষার্থেই প্রতিষিদ্ধান্ন ভোজন শাস্ত্রানুমত। এইরূপ ম্লেচ্ছদিগকে কহিয়া ঐ শ্রোত্রিয় ব্রাহ্মণ জনকভূপাল যাগভূমিতে গেলেন। পরমহংস ঐ ব্রাহ্মণকে কহিলেন হে ব্ৰাহ্মণ আমার কমণ্ডলুস্থ জলপানে তোমার যদি নিরামিষ ভোজন ব্রত ভঙ্গ শঙ্কা হইয়া থাকে তবে এই বেদপ্রসিদ্ধোপাখ্যান প্রমাণ্যে সে সন্দেহ দূর কর। বস্তুতঃ তোমার এ নিয়ম শ্রুতি স্মৃতি পুরাণ বহির্ভূত স্ববুদ্ধিমাত্র কল্পিত আত্যন্তিক। সৰ্ব্বমতান্তগর্হিতং আত্যন্তিক কিঞ্চিম্মাত্রও ভদ্র নহে শিষ্ট পরস্পরা প্রসিদ্ধ যে তাহাই কর্তব্য। এ বিষয়ে এক কথা শুন। ভরদ্বাজ নামে এক মুনিপুত্র ছিলেন। তিনি মনুষ্য লোকেতে যাবৎ শাস্ত্রের প্রচার আছে তাবৎ শাস্ত্র মর্ত্যলোকে পাঠ করিয়া মনে করিলেন আমি মনুষ্যলোকীয় সকল শাস্ত্র অধ্যয়ন করিলাম সম্প্রতি পৃথিবীতে এমন কেহ নাই যে আমাকে অধ্যয়ন করায়। অতএব স্বর্গে হুর্য্যের নিকটে গিয়া স্বর্গলোক প্রচারিত সৰ্ব্বশাস্ত্র অধ্যয়ন করি । এইরূপ মনোরথারূঢ় হইয়া তপোবন হইতে মধ্যাহ্ন সময়ে দিবাকরের নিকটে গিয়া অনতিদূরে থাকিয়া আদিত্যকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন হে ভাস্কর তুমি সৰ্ব্বশাস্ত্রাকর আমি তোমার সমীপে দেবলোকীয় সৰ্ব্বশাস্ত্ৰাধ্যয়ন করিতে আসিয়াছি আমাকে পাঠ কবাও । প্রভাকর কহিলেন আমি এক নিমেষাৰ্দ্ধে দুই হাজার দুই শত দুই যোজন গমন করি এবং আমার তেজঃ অতি দুঃসহ আমি মধ্যাহ্ন কালাতিরিক্ত ক্ষণমাত্র স্থির নহি । তোমার অধ্যয়ন আমার নিকটে কিরূপে হইবে। আর তোমারি বা অধ্যয়নের আবগুক কি ! তোমার যে অধীতব্য তাহ অধীত হইয়াছে। ঈশ্বর ভিন্নের সর্বশাস্ত্র জ্ঞান বাসনা দুৰ্ব্বাসনামাত্র সে ফলোপধায়ক হয় না। অতএব এ দুরাগ্রহ ত্যাগ কর । স্বস্থানে গমন কর। স্বৰ্য্যের এ বাক্য শুনিয়া ভরদ্বাজ কহিলেন তুমি যেমন গমন করিবা আমিও তোমার সহিত তেমনি গমন করিব আর তোমার তেজেতে আমার কি করিতে পরিবে । বহ্নি কি বহ্নিকে দগ্ধ করে। যে তপোবলে তোমার এতাদৃশ সামর্থ্য ও তেজ হইয়াছে তাদৃশ তপোবল কি অন্তের নাই। এইরূপ ভরদ্বাজের সাহঙ্কার বাক্য শ্রবণ করিয়া স্বৰ্য্য নারায়ণ দেব মনে করিলেন যে ইহার তত্ত্বজ্ঞান নাই। কেবল 5. So >ԳՀ»