পাতা:কলিকাতা সেকালের ও একালের.djvu/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় অধ্যায়। ৬৩ ইতিহাস-প্রসিদ্ধ, স্বনামধন্ত বঙ্গাধিপতি আদিশূর মহারাজ, কান্যকুজ হইতে গৌড়ে, যে পঞ্চজন বেদ-পারগ ব্রাহ্মণ যজ্ঞার্থে আনয়ন করেন, তন্মধ্যে সাবর্ণ-গোত্রসস্তৃত—বেদগর্ত একজন । ইনি রাজার নিকট বটগ্রাম প্রাপ্ত হন । এই বটগ্রাম যে কোথায়, তাহার কোন সন্ধানই পাওয়া যায় না। কানাকুজাগত পাঁচজন ব্রাহ্মণের, ৫৬টা পুত্র জন্মে। আদিশূরের উত্তরাধিকারী, মহারাজ ক্ষিতিস্বর এই ৫৬ জন ব্রাহ্মণকে ৫৬টা গ্রাম প্রদান করেন। এই গ্রামদান ব্যাপার হইতে “গাই” শব্দের উৎপত্তি হইল। "গাই” অর্থাৎ গ্রামাধিকারী । বেদগর্তের দ্বাদশপুত্রের মধ্যে, হল নামধারী এক পুত্র ‘গঙ্গ” গ্রাম প্রাপ্ত হন । এই জন্ত হলের সস্তুতিবর্গ গঙ্গোপাধ্যায় বলিয়া আখ্যাত হইতেছেন। এই হলের অধস্তন চতুর্দশ পুরুষে, কামদেব গঙ্গোপাধ্যায়ের উদ্ভব দেখিতে পাওয়া যায়। কামদেবের পূর্বপুরুষেরা, বল্লালের সময় কৌলীন্তমর্যাদা লাভ করেন নাই। এই কৌলীন্ত-মৰ্য্যাদার সমীকরণ কালে, কামদেবের পিতৃপুরুষেরা শ্রোত্রীয়-সংজ্ঞা প্রাপ্ত হন। কামদেব শাস্ত্রজ্ঞ সদাচারী পণ্ডিত ছিলেন। তিনি দিবারাত্র জপ-তপ ও শাস্ত্রচর্য্যায় নিমগ্ন থাকিতেন। র্তাহার প্রাণ সংসার-বন্ধন হইতে মুক্ত হইবার জন্য, সৰ্ব্বদাই চেষ্টা করিত । কিন্তু গুণবতী পত্নীর স্নেহ ও প্রেমে আবদ্ধ থাকায়, তাহার সে বাসনা সিদ্ধির কোন সুযোগই ঘটে নাই । সহসা এ সম্বন্ধে একটী দৈব-প্রেরিত সুযোগ উপস্থিত হইল। ভগবানের ভক্ত-বৈরাগ্য-মার্গ অবলম্বনের জন্তু প্রস্তুত হইলেন। র্তাহার সংসার-বন্ধন শৃঙ্খল একটা ঘটনায় ছিন্ন হইল। দারুণ প্রসব বেদনার পর, এক পুত্র প্রসব করিয়া, কামদেব পত্নী—পদ্মাবতী, দেহত্যাগ করিলেন। সম্মুখে পত্নীর মৃতদেহ—আর তাহার ক্রোড়-পাশ্বে সদ্যোপ্রস্থত শিশু । কামদেব একদৃষ্টিতে পত্নীর মৃতদেহের দিকে চাহিয়া আছেন, আর মনে মনে ভাবিতেছেন—“হা ভগবান ! হা প্রতু ! করিলে কি ? এই সন্তোজাত মাতৃহীন বালকের উপায় কি হইবে ? কোথায় আমি মায়ার | কাটাইবার জন্য চেষ্টা করিতেছি, তাহা না হইয়া—এই মাতৃহীন ক আমার সংসার-বন্ধন আরও দৃঢ় করিয়া দিল ।” কামদেব এই সমস্ত কথা ভাবিতেছেন—এমন সময়ে সেই পূর্ণকুটরের মধ্য হইতে একটী জেঠীর (টিকৃটিকি ) ডিম্ব, র্তাহার সন্মুখে পড়িল । বামাত্রই ডিম্বটা ভাঙ্গিয়া গিয়া, তাহার মধ্য হইতে একটা টিকটিকির