তোলে। জানে না তুই মহারানার মেয়ে। ওকে কুকুরের মতো চাবুক মেরে সিধে করতে হয়।’ শিরোহীর তখন নেশা ছুটে গেছে, সে পৃথ্বীরাজের পা জড়িয়ে বললে, ‘এমন কাজ আর হবে না, ক্ষমা করো।’ পৃথ্বীরাজ তার ঘাড় ধরে দাড় করিয়ে বললেন, ‘নে, আমার বোনের জুতোজোড়া মাথায় করে ওর কাছে ক্ষমা চ —তবে রক্ষে পাবি ? ‘একথা আগে বললেই হত, বলে তাড়াতাড়ি জুতোজোড়া তুলে নেয় দেখে রানী বললেন, ‘থাক এবার এই পর্যন্ত । যাও এখন দাদাকে জলটল খাইয়ে ঠাণ্ড করোগে, আমায় একটু ঘুমুতে দাও।” রানার জামাই খুব খাতির করে পৃথ্বীরাজকে বাইরে নিয়ে বসিয়ে সোনার রেকাবিতে শিরোহীর খাসা নাডু গুটিকতক জল খেতে দিলেন । শিরোহীর খাস-নাডু— অমন নাডু কোথাও হয় না, পৃথ্বীরাজ তাই গোটা চার-পাচ মুখে ফেলে এক ঘটি জল খেয়ে ঘোড়া হাকিয়ে কমলমীরে আপনার দলবলের সঙ্গে মিলতে চললেন । কমলমীরে আর তার পৌছতে হল না ; শিরোহীর মতিচুর সেঁকোবিষ আর হীরেচুরে মেখে তার ভগিনীপতি খেতে দিয়েছিল —জুতোতোলার শোধ নিতে ! তখন রাত কেটে সবে সকাল হচ্ছে, দূর থেকে কমন্স নীর অস্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, সেই সময় পৃথ্বীরাজ ঘোড়া থেকে ঘুরে পড়লেন–রাস্তার ধুলোয়। কমলমীর —যেখানে তার তারারানী একা রয়েছেন, সেইদিকে চেয়ে তার প্রাণ হঠাৎ বেরিয়ে গেল —দূরে —দূরে – কতদূরে সকালের আগুনবরণ আলোর মাঝে নীল আকাশের শুকতারার অস্তপথ ধরে। আর ঠিক সেই সময় সঙ্গের অদৃষ্ট শ্রীনগরের নহবতখানায় বসে আশা-রাগিণীর সুর বাজিয়ে দিলে – ‘ভোর ভয়ি, ভোর ভয়ি ? こ>Q