পালন করিতে লাগিল। যেখানে শিশু সকল নবীন বয়সে সন্ধ্যাকালের মল্লিকাকুসুমতুল্য উৎফুল্ল হইয়া হৃদয়তৃপ্তিকর হাস্য হাসিত, সেই খানে আজি যূথে যূথে বন্যহস্তী সকল মদমত্ত হইয়া বৃক্ষের কাণ্ডসকল বিদীর্ণ করিতে লাগিল। যে খানে দুর্গোৎসব হইত, সে খানে শৃগালের বিবর, দোলমঞ্চে পেচকের আশ্রয়, নাটমন্দিরে বিষধর সর্প সকল দিবসে ভেকের অন্বেষণ করে। বাঙ্গালায় শস্য জন্মে, খাইবার লোক নাই; বিক্রেয় জন্মে কিনিবার লোক নাই; চাসা চাস করে টাকা পায় না, জমীদারের খাজনা দিতে পারে না; জমীদারেরা রাজার খাজনা দিতে পারে না, রাজা জমিদারী কাড়িয়া লওয়ায় জমীদারসম্প্রদায় হৃতসর্ব্বস্ব হইয়া দরিদ্র হইতে লাগিল। বসুমতী সুপ্রসবিনী হইলেন তবু আর ধন জন্মে না। কাহারও ঘরে ধন নাই। যে যাহার পায় কাড়িয়া খায়। চোর ডাকাতেরা মাথা তুলিল, সাধু ভীত হইয়া ঘরের মধ্যে লুকাইল।
এ দিকে সন্তানসম্প্রদায় নিত্য সচন্দন তুলসীদলে বিষ্ণুপাদপদ্ম পূজা করে, যার ঘরে বন্দুক পিস্তল আছে কাড়িয়া আনে। ভবানন্দ বলিয়া দিয়াছিলেন “ভাই! যদি এক দিকে এক ঘর মণি মাণিক্য হীরক প্রবালাদি দেখ আর একদিকে একটা ভাঙ্গা বন্দুক দেখ, মণি-মাণিক্য হীরক প্রবালাদি ছাড়িয়া ভাঙ্গা বন্দুকটী লইয়া আসিবে।”
তার পর, তাহারা গ্রামে গ্রামে চর পাঠাইতে লাগিল। চর গ্রামে গিয়া যেখানে হিন্দু দেখে, বলে ভাই বিষ্ণুপূজা করি? এই বলিয়া ২০।২৫ জন জড় করিয়া মুসলমানের গ্রামে আসিয়া পড়িয়া মুসলমানদের ঘরে আগুন দেয়। মুসলমানেরা প্রাণরক্ষায় ব্যতিব্যস্ত হয়, সন্তানেরা তাহাদের সর্ব্বস্ব লুঠ করিয়া নূতন বিষ্ণুভক্তদিগকে বিতরণ করে। লুঠের ভাগ পাইয়া গ্রাম্য লোকে প্রীত