পাতা:গল্পাঞ্জলি.djvu/১৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՖԳեյ গল্পাঞ্জলি পরে তিনি আমায় বলিয়াছিলেন, বৃটিশ মিউজিয়মের পাঠাগারে আমায় দেখিবামাত্র, আমার পিতার সহিত প্রবল সোসাদৃশু অনুভব করিয়াছিলেন। আমার পরিচয়ের জন্ত উৎকণ্ঠিত হইয়া তিনি সে দিন আমায় পশ্চাৎ পশ্চাৎ ভিয়েনা রেষ্টোরাতে প্রবেশ করিয়াছিলেন ; নচেৎ প্রকাশু স্থানে ভোজনাদি করা তাহার নিতান্তই অপ্রীতিকর। যথাসময়ে আমি বারে কলড্র হইলাম। র্তাহাকে সঙ্গে করিয়া অনিৰার জন্ত অনেক সাধ্য সাধনা করিলাম। বলিলাম—“আপনি এখন বৃদ্ধ হইয়াছেন। এখন সৰ্ব্বদা আপনার সেবাধত্বের আবশুক। আমার গৃহে আসিয়া মাতৃগৌরবে আমার সেবা গ্রহণ করুন।”—কিন্তু কিছুতেই তাহাকে সন্মত করিতে পারিলাম না । বলিলেন—“এ বয়সে জন্মভূমি ছাড়িয়া অন্য কোথাও গেলে আমি শাস্তি পাইব না।” দেশে ফিরিয়া আসিয়া প্রতি মেলেই তাহাকে পত্র লিখিতাম এবং তাহার পত্র পাইতাম। আমার যখন বিবাহ হইল, আমার স্ত্রীকে আশীৰ্ব্বাদ স্বরূপ তিনি সেই সোণার চুড়ি দুই যোড়া পাঠাইয়া দিলেন। আমার স্ত্রী সৰ্ব্বদা সেগুলি পরিয়া থাকেন । তাহার পর আমার খোকা জন্মিল। তিনি লিখিলেন, খোকা একটু বড় হইলেই, তাহাকে ও তাহার মাকে লইয়া আমি যেন একবার বিলাত যাই । মরিবার পূৰ্ব্বে, আমাদের তিন জনকে একবার দেখিবার তাহার বড় সাধ হইয়াছে। এ কথা উপধুপিরি কয়েকখানি পত্রেই লিখিলেন । সে বৎসর পূজার ছুটিতে আমরা বিলাত যাইব, সমস্ত স্থির হইল। তাহাকে এ সংবাদ লিখিলাম। কিন্তু পত্রখানি দেড়মাস পরে ফিরিয়া আসিল । খামের উপর লওনের পোষ্ট আফিস রবারট্যাম্পের ছাপ মারিয়া দ্বিয়াছে—“মালিক মৃত, পত্র বিলি হইল না।” আমি দ্বিতীয়বার মাতৃহীন হইলাম।