পাতা:বিভূতি রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড).djvu/২২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবাগত ২১৩ জন্তে, না উনি আমার সম্বন্ধে ভুল খবর পেয়েছেন ? আমি তখনি প্রতিবাদ করতাম কিন্তু হঠাৎ কেমন দুর্বলতা এসে গেল মনে। ওই যে মেয়েটি এখানে বসে আছে, ওর কাছে এখুনি এত খেলো হব কেন ? বিয়ে হবে না জানি, মেয়েটি উঠে যাক—আমিও এখান থেকে চলে যাই—তারপর আমি যা করবে তা আমার জানাই আছে। রায় মশায়ই বল্লেন—তা’হলে মেয়েটিকে বাড়ীর মধ্যে নিয়ে যেতে পারি ? অপরাধের বোঝা যথেষ্টই ভারী হয়েছে তার কাছে আমার । আর নয়—আমি মেয়েকে নিয়ে যেতে বল্লাম। একটু পরে এল বাড়ীর মধ্যে থেকে মেয়ের হাতের নানারকম স্থচের কাজকৰ্ম্ম—একটি রাশ। কত রকমের তুলোর কুকুর, পশমের আসন, রুমাল, টেবিল ঢাকা কাপড়, মাছের আঁশের হাস, ফ্রেম বাধানো—ইত্যাদি ! একটি স্বদর্শন ছোট ছেলের সঙ্গে একজন ঝি সেগুলো নিয়ে এসে আমার সামনে রাখলে ৷ গিন্নিম নাকি সেগুলি পাঠিয়েছেন। আরও আধ ঘণ্টা। এইবার রওনা হতে হবে । ওঁদের কাছ থেকে বিদায় নিলাম। সীতানাথ রায় মশায় আমাকে প্রথমে কিছুতেই আসতে দেবেন না, রাত হয়ে আসচে—এখন তিনি আমায় ছেড়ে দিতে পারেন না। রাত্রে এখানেই থাকতে হবে। আমি বল্লাম—কোন অস্ববিধে হবে না, মঙ্গলগঞ্জের ঘাটে নৌকো ভাড়া ক'রে চলে যাবে। সে ঘাট তো মোটে দু'মাইল । জ্যোৎস্নারাত্রে বেশ চলে যাবে। সীতানাথ রায় মশাই আমার সঙ্গে একাই খানিক দূর হেঁটে চললেন। বল্পেন— আপনাকে আর বেশি কি বলবো মেয়ে আমার বড় ভালো । —আজ্ঞে নিশ্চয়ই । —আপনার মতামতটা যদি জানাতেন— —সেটা আমার মামার সঙ্গে পরামর্শ করে আপনাকে জানাবো, কারণ মামাই বলতে গেলে এখন অভিভাবক— • * বলা বাহুল্য, যে মাতুলকে কৰ্ম্মকর্তা নির্দেশ করলাম, তার খবর পর্য্যস্ত রাখিনি আজ তিন চার বছর। বল্লুম—তাহলে আপনি আর এগোবেন না—সদ্ধে হয়ে এল— স্থানটি নির্জন। গ্রাম ছাড়িয়ে বড় একটা বিল ডান দিকে, সামনে ধুধু মাঠের বুক চিরে সাদা বালির রাস্ত সোজা পশ্চিম দিকে চলে গিয়েচে । কেউ কোথাও নেই। রায় মশায় এদিক ওদিক তাকিয়ে স্বর নীচু করে বরেন—ঘাতে এ হয়, তা তোমাকে করতেই হবে বাবাজী । আমার স্ত্রীর বডড পছন্দ হয়েচে তোমাকে, আমায় ডেকে বলছিল । আর কি জানো, বাইরে ঠাট যতই দ্যাথো, তেমন অবস্থা তো আর নেই। তোমার স্থত স্বপাত্র কোথায় পাবো । দেনা পাওনার জঙ্ক কিছু আটকাবে না—তোমার কলকাতার বাড়ী সাজানো আসবাবপত্তর দিতে পারব ন্ম হয়তো, তবে মেয়ের গ! সাজানো গহনা