পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/২৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্গদর্শন। ধৰ্ম্মবোধের দৃষ্টান্ত । জুরির বিচার একবার এদেশ হইতে উঠাইয়া দিবার কথা হইয়াছিল—তাহা লইয়া আমাদের কাগজে-পত্রে সভাসমিতিতে খুব একটা কলরব ওঠে । সেইসময় আমাদের দেশীয় একজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তির বাড়ীতে কোন নিমন্ত্রণে আমি উপস্তিত থাকি । সেখানে কোন কলেজের ইংরাজ প্রিন্সিপাল ও নিমন্ত্রিত ছিলেন । তিনি নিজে ইচ্ছা করিয়া এই জুরিয় কথাটা তুলিলেন । নিমন্ত্রণকর্তী জুরিবিচার এদেশে টেকে, এমন ইচ্ছা প্রকাশ করাতে অধ্যাপক কহিলেন, যে দেশের অৰ্দ্ধসভ্য লোক প্রাণের xtizrxIT (Sanctity of Life ) «atra, ai, তাঙ্গাদের হাতে জুরিবিচারের অধিকার দে ওয়া আন্তায় । ইংরাজের এই কথাটি লইয়া চিন্তা করিবায় বিষয় অনেকগুলি ছিল । শুরুতর চিন্তার বিষয় এই যে, আমাদের ছেলেদের শিক্ষার ভার ইহার হাতে । উপনিষদে অাছে “শ্রদ্ধয়া দেয়ম অশ্রদ্ধয় অদেয়ম্”— শ্রদ্ধার সহিত দান করিবে, অশ্রদ্ধার সহিত দান করিবে না । ভিক্ষাদানসম্বন্ধে যদি এ কথার মূল্য থাকে, তবে শিক্ষাদানসম্বন্ধে এ কথা আরো কত খাটে ! কেবল ইংরাজি কথার ইংরাজি মানে শেখাই পরম লাভ, তাহ মহে— আত্মসন্মানটা একটা মস্ত জিনিষ । কিন্তু ইহা আমরা প্রত্যহ দেখিতে পাই, সমস্ত বাধানিষেধ-অপমান স্বীকার করিয়াও ছেলেকে ইংরাজের ইস্কুলে দিবার জন্য আমাদের অভিভালকেরা লীলায়িত হইয়া ফেরেন ; তাহার কারণ, বিশুদ্ধ ইংরাজি উচ্চারণকে ই হারা বিশুদ্ধ মনুষ্যত্বের চেয়ে দামী বলিয়া বুঝিয়াছেন । এই অভিভাবকগণ সম্ভবত রায়বাহাদুর হইয়া মুখে মরিতে পারিবেন, কিন্তু অপমানে দীক্ষিত হতভাগ্য ছেলেগুলির জন্ত দুঃখ হয় ! আর একটি কথা এই যে, নিমন্ত্রণকারী ভদ্রলোকটি বাঙালি বলিয়া, যে বিদেশী * সামান্ত শিষ্টতাটুকু ভুলিয়া যায়, বাঙালির প্রতি স্ববিচার করিতে সে কি পারে ? প্রাণের মাহাত্ম্য যেমন একটা আছে, মানের মাহাত্ম্য ও তেমনি আছে । দুটো প্রায় একসঙ্গেই থাকে । তোমার কাছে যাহার মানের মহাত্ম্য কম, তাহার প্রাণের মাহাত্মাও অল্প,