পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

తిe ৰজদশৰ । [ ৬ষ্ঠ বর্ষ, অtষাঢ় । আরো নিভূতভাব ধারণ করিয়াছে । ছোটছোট উষ্ঠানগুলিও প্রাচীরবদ্ধ —সমাধিভূমিসুলভ একপ্রকার উদ্ভিজ্জের দ্বারা আক্রাস্ত ;– কাটাগাছের ঝোপঝাড়, লম্বা-লম্বা উদাম তৃণরাশি, চর্কার পাইজের মত বড়-বড় Hollyhock,—এই সব তৃণগুন্মে আচ্ছন্ন। প্রাসাদের অভ্যন্তরেগৈলোকধাঁধার মত কতকগুলা অদ্ভুক্ত ধরণের ঘর ;–নীচু, অন্ধকেরে, বিচিত্র নক্সার কাজে কিংবা চিত্রে বিভূষিত ; কিন্তু এই সব নক্সাদি এখন অনেকটা ক্ষয় হইয়া গিয়াছে। প্রাসাদটি এরূপভাবে নিৰ্ম্মিত যে, দিবসের প্রত্যেক মুহূৰ্ত্তেই, ছায়া ও শৈত্য সকল দিকেই সমান উপভোগ করা যাইতে পারে ; ইচ্ছা করিলে, এই প্রাসাদেই,কখন তুমি বিষগ্ন ফুলের কেয়ারীর সম্মুখে, কখন দুরস্থ ব্যাঘ্রসস্কুল অরণ্যের সম্মুখে, কখন বা নিকটবৰ্ত্তী সরোবরতীরস্থ শুভ্র পরীপ্রাসাদের সম্মুখে, আপন কল্পনায় বিভোর হইতে পার। এই দ্বীপের ছোট-ছোট ঘরগুলিতে—এখানকার এই সব "পোড়ো” বরগুলিতে,—একসময় না জানি কত জীবননাট্য অভিনীত হইয়াছে,—দীর্ঘকাল ধরিয়া কত লোকে কত কষ্টযন্ত্রণা ভোগ করিয়াছে ! এক্ষণে এই ঘরগুলি,—সরোবরের আৰ্দ্ৰতা, শৈবাল, ও যবক্ষারের প্রভাবে ধীরেধীরে বিনষ্ট-হওয়া-প্রযুক্তই কি পরিত্যক্ত হইब्रां८छ् ?..প্রাচীরের কুলুঙ্গিতে,—সমাধিস্থানের আধো অন্ধকারের মধ্যে-কতকগুলা ছোটথাটো খেলনাসামগ্ৰী শাশি-দরজার মধ্যে রুদ্ধ। প্রায় একশত বৎসর হইল,এই সব দ্রব্য যুরোপ হইতে আইসে, সুতরাং মহামূল্য হইবারই কথা !-পুরাতন চীনেমাটির পাত্রাদি, ষোড়শ লুইর আমলের পোষাকপর পুতুল, ছোট-ছোট ঘটে বসানো কৃত্রিম পুষ্পাদি ।...না জানি কত রাণী, কত রাজকুমারী এই সকল ক্ষণভঙ্গুর উপঢৌকন প্রাপ্ত হইয়াছিলেন ! তাহারা চলিয়া গিয়াছেন–র্তাহীদের জিনিষগুলি এইখানেই রহিয়া গিয়াছে।... - ইহার পরেই, বড় দ্বীপটিতে নামিলাম । এখানকার প্রাসাদগুলি, প্রায় তিনশত বৎসর হইল, একজন-প্রবলপ্রতাপ-নৃপতি-কর্তৃক নিৰ্ম্মিত হয়। এই প্রাসাদগুলি অপেক্ষাকৃত আরো বিশাল, আরো ভগ্নদশাপন্ন। ঘাটের সিড়ি প্রকাও ;–ধাপগুলি শাদা ধপধপে— জলে অদ্ধনিমজ্জিত; সরোবরের সমরেখাপাতে, সোপানের ধারে-ধারে বড়-বড় পাথরের হাতী সারি-সারি সজ্জিত ;—মনে হয় যেন তাহারা নৌকার আগমন নিরীক্ষণ করিতেছে। পাশ্ববৰ্ত্তী ছোট দ্বীপটির দ্যায়, এখানকার বিষঃ উদ্যানগুলিও প্রাচীরবদ্ধ ; কিন্তু এই সকল প্রাচীরে, নক্সা-কাজের খুঁটিনাটি আরো বেশী ;–কারিকরদিগের ধৈৰ্য্যের পরিচয় আরো বেশী পাওয়া যায়। দাক্ষিণাত্যের বড়-বড় তালগাছ এখানে আছে ; এই সব তালগাছ এখানে বহু-অবস্থায় বদ্ধিত হয় না;-রাজপ্রাসাদেরই চতুৰ্দ্ধিকে বিলাসসামগ্রীরূপে সংরক্ষিত। নারাঙ্গিকুঞ্জের উদিগরিত সৌরভে চারিদিক্‌ আমোদিত ; মরাপাতার উপর নারাঙ্গিফুলের পাপড়ি ঝরিয়া-পড়িয়া গাছের তলদেশ ছাইয়া গিয়াছে; —মনে হয় যেন জমাট শিশিরবিন্দুর একটা স্তর পড়িয়াছে। আমরা যখন প্রবেশ করিলাম, তখন একটু বেশী বেলা হইয়া গিয়াছে ; —উচ্চ ও খাড়া পৰ্ব্বতগুলার পশ্চাতে সুর্য্য অনেকটা ঢলিরা পড়িয়াছে ; তাই সরোবরের