পাতা:গল্প-গ্রন্থাবলী (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়) তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

छूठ ना काब्र ? ●8● “আপনি তেতলার মহল ভাড়া দিবেন ?” “आळख झाँ।” “কত ভাড়া ?. আমি লুইতে ইচ্ছা করি।” আমি বলিলাম—“আপনি লইবেন ? বেশ ত! আগে দেখনে কেমন ঘর দয়ার। পছন্দ যদি হয়, তাহার পর সে কথা হইবে।” সাহেব সক্ষমত হইলেন। আমি বাড়ীর ভিতর হইতে সিড়ির খিড়কী-দরজার চাবি চাহিয়া আনিলাম। সাহেবকে লইয়া উপরে গেলাম। ঘরগলি, গোসলখানা ইত্যাদি সমস্ত দেখিয়া সাহেব ভারি খাসী হইলেন। শেষে ছাদের উপর যাওয়া গেল। সেখানে একটি ছোট কুঠারি ছিল; সাহেব বলিলেন, এইটি আমার “বাবচ্চিখানা" হইবে। দেখা শেষ হইলে দুইজনে অবতরণ করিয়া বৈঠকখানায় আসিয়া বসিলাম। ভাড়ার কথা হইল। সাহেব বলিলেন—“কত চাহেন ?" আমি বলিলাম, “কত দিতে পারেন ?” সাহেব বলিলেন—“দশ।” আমি শনিয়া হাসিলাম। মৌলবী সাহেব তাঁহার সেই সদীঘ দাড়ী দোলাইয়া হা হা হা হা করিয়া সপ্তমে এমন হাসিলেন যে সমখে রাজপথচারী দুই চারিজন লোক ঘরের মধ্যে সোৎসকে দটিপাত করিয়া চলিয়া গেল। মৌলবী সাহেব যাহা বলিলেন, তাহার ভাবাথ এই—“এমন ইন্দ্ৰালয় (ফিরদোস্ত) ইহার ভাড়া দশ টাকা ।” সাহেব ভ্রত্রুেঞ্চিত করিয়া আমাকে বলিলেন—“বাব, আপনি কত চাহেন ?” আমি বলিলাম—“প’চিশ।" সাহেব বলিলেন—“অত হইবে না, পনেরোর বেশী এক পয়সা নহে।" আমি বলিলাম—“সাহেব আপনি বিবেচনা করন। তেতলার উপর, ভেণ্টিলেটেড ঘর, অমন ছাদ” ইত্যাদি। সাহেল কিছুক্ষণ চপ করিয়া রহিলেন। পরে আমার মাখের পানে কাতর দটিতে চাহিয়া বলিলেন—“বাব, আপনি আমির লোক ; আমি বড় গরীব। আমার প্রতি দয়া করিয়া যদি অলপ ভাড়ায় দেন ত ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করিবেন।” সাহেবের করণে কাতরোক্তিতে আমার হদয় গলিয়া গেল। হোক না কালো ফিরিঙ্গি সাহেব-হ্যাটকোটধারী ত বটে! ঐ পরিচ্ছদবিশিষ্ট জীবগণের নিকট হইতে গালি ধমকই অীমাদের ন্যায্য পাওনা বলিয়া অনেক দিন হইতে মনে মনে একটা ধারণা বন্ধমলে আছে। সতরাং ও শ্রেণীর লোকের নিকট হইতে মিন্ট কথা শুনিলেই ভিজিয়া যাইতে হয়— কাতরোক্তিতে আর হইবে না ? আমি বলিলাম—“আচ্ছা সাহেব, আপনি বসন। দশ মিনিট পরে আসিয়া আপনাকে বলিব।” সাহেব নিঃশ্বাস ফেলিয়া রাস্তার দিকে চাহিয়া বলিলেন—“তলিরাইট বাৰ।” গহিণী ত প্রথমে সাহেব শুনিয়া কিছুতেই রাজি হন না। বলিলেন—“সাহেবকে ভাড়া দিব যদি, তবে মসলমানেরা কি দোষ করিয়াছিল ? কে জানে বাপ, তোমার কেমন প্রবত্তি!” আমি তাঁহাকে বিশেষ করিয়া বঝাইলাম—সাহেবেরা মসলমান নহে, উহারা অন্য জাতি। খবে পবিকার পরিচ্ছন্ন ইত্যাদি। গহিণী বলিলেন—“সেই ত মাংস রাঁধিবে, পেয়াজ রাঁধিবে, গন্ধে বাড়ী ছাড়িয়া পলাইতে হইবে ?” আমি বলিলাম —“সে ভয় নাই; সাহেবের রসইঘর ছাদের উপর হইবে, এখানে দগধে আসিবে না।” —শুনিয়া গহিণী আশবঙ্গত হইলেন এবং মত করিলেন। ভাড়ার কথায় তাঁহার কোনও বক্তব্য ছিল না। অর্থনীতি সম্বন্ধে তাঁহার সেরেস্তাদার স্বামী তাঁহার অপেক্ষা অনেক বেশী চতুর, ইহাই তাঁহার চিরদিন বিশ্বাস। তবে তিনি বলিলেন—“সাহেব যদি ননী আর চারকে কিছু কিছল ইংরাজি পড়াইতে স্বীকার হন, তবে অলপ ভাড়ায় বা ভাড়া না লইয়া দেওয়া যাইতে পারে।" শনিয়া আমার মনে হইল, ঠিক ত! “দেখা যাক" বলিয়া একটা পাণ মুখে দিয়া নীচে চলিয়া গেলাম।