সেইরূপ কলিকাতা বাসের সময় একদা শ্বশুর বাড়িতে স্ত্রী পুরবালার সঙ্গে অক্ষয়কুমারের নিম্নলিখিত মত কথাবার্তা হয়:–
পুরবালা। তোমার নিজের বোন্ হলে দেখ্তুম কেমন চুপ করে বসে থাক্তে! এতদিনে এক একটির তিনটি চারিটি করে পাত্র জুটিয়ে আন্তে! ওরা আমার বোন কি না—
অক্ষয়। মানব চরিত্রের কিছুই তোমার কাছে লুকোনো নেই। নিজের বোনে এবং স্ত্রীর বোনে যে কত প্রভেদ তা এই কাঁচা বয়সেই বুঝে নিয়েছ! তা ভাই শ্বশুরের কোনও কন্যাটিকেই পরের হাতে সমর্পণ করতে কিছুতেই মন সরে না—এ বিষয়ে আমার ঔদার্য্যের অভাব আছে তা স্বীকার করতে হবে।
পুরবালা সামান্য একটু রাগের মত ভাব করিয়া গম্ভীর হইয়া বলিল—দেখ তোমার সঙ্গে আমার একটা বন্দোবস্ত করতে হচ্চে।
অক্ষয়। একটা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ত মন্ত্র পড়ে’ বিবাছের দিনেই হয়ে গেছে, আবার আর একটা!—
পুরবালা। ওগো, এটা তত ভয়ানক নয়! এটা হয়ত তেমন অসহ্য না হতেও পারে।
অক্ষয় যাত্রার অধিকারীর মত হাত নাড়িয়া বলিল—সখি, তবে খুলে বল!—বলিয়া ঝিঝিটে গান ধরিল—
কি জানি কি ভেবেছ মনে,
খুলে বল ললনে!
কি কথা হায় ভেসে যায়,
ঐ ছলছল নয়নে!
এইখানে বলা আবশ্যক, অক্ষয়কুমার ঝোঁকের মাথায় দুটাে চারটে লাইন গান মুখে মুখে বানাইয়া গাহিয়া দিতে পারিতেন। কিন্তু কখনই কোন গান রীতিমত সম্পূর্ণ করিতেন না। বন্ধুর বিরক্ত হইয়া বলিতেন,