৩৬
মধুসূদন বাইরে গিয়ে নবীনকে ডেকে পাঠিয়ে বললে, “বড়োবউকে তোরা খেপিয়েছিস।”
“দাদা, কালই তো আমরা যাচ্ছি, তোমার কাছে ভয়ে-ভয়ে আর ঢোঁক গিলে কথা কব না। আমি আজ এই স্পষ্ট বলে যাচ্ছি, বড়োবউরানীকে খেপাবার জন্যে সংসারে আর কারও দরকার হবে না, তুমি একাই পারবে। আমরা থাকলে তবু যদি বা কিছু ঠাণ্ডা রাখতে পারতুম, কিন্তু সে তোমার সইল না।
মধুসূদন গর্জন করে উঠে বললে, “জেঠামি করিস নে। রজবপুরে যাবার কথা তোরাই ওকে শিখিয়েছিস।”
“এ-কথা ভাবতেই পারি নে তো শেখাব কী।”
“দেখ্, এই নিয়ে যদি ওকে নাচাস তোদের ভাল হবে না, স্পষ্টই বলে দিচ্ছি।”
“দাদা, এ-সব কথা বলছ কাকে? যেখানে বললে কাজে লাগে বলো গে।”
“তোরা কিছু বলিস নি?”
“এই তোমার গা ছুঁয়ে বলছি, কল্পনাও করি নি।”
“বড়োবউ যদি জেদ ধরে বসে তাহলে কী করবি তোরা?”
“তোমাকে ডেকে আনব। তোমার পাইক বরকন্দাজ পেয়াদা আছে, তুমি ঠেকাতে পার। তার পরে তোমার শত্রুপক্ষেরা এই যুদ্ধের সংবাদ যদি কাগজে রটায় তাহলে মেজোবউকে সন্দেহ করে বোসো না।”
মধুসূদন আবার তাকে ধমক দিয়ে বললে, “চুপ কর্! বড়োবউ যদি রজবপুরে যেতে চায় তো যাক, আমি ঠেকাব না।”