(২)
জারক্ষার কর্যে তুলেছে। দক্ষিণ পাড়ার মোড়লদের বাড়ীর দিকে চাওয়া হয় না, আহা! কি ছিল কি হয়েছে। তিন বৎসর আগে দুবেলায় ৬০ খান পাত পড়্তো, ১০ খাই লাঙ্গল ছিল, দামড়াও ৪০।৫০ টা হবে। কি উঠানই ছিল, যেন ঘোর দৌড়ের মাঠ, আহা! যখন আসধানের পালা সাজাতো বোধ হতো যেন চন্দন বিলে পদ্ম ফুল ফুটে রয়েছে। গোয়াল খান ছিল যেন একটা পাহাড়। গেল সন, গোয়াল, সারিতে না পারায় উঠানে হুমড়ি খেয়ে পড়ে রয়েছে। ধানের ভূঁয়ে নীল করেনি বল্যে মেজো সেজো দুই ভাইকে ধরে সাহেব বেটা আর বৎসর কি মারটিই মেরেছিল; উহাদের খালাশ কর্যে আন্তে কত কষ্ট, হাল গোরু বিক্রী হয়ে যায়। ঐ চোটেই দুই মোড়ল গাঁ ছাড়া হয়।
গোলোক। বড় মোড়ল না তার ভাইদের আন্তে গিয়াছিল?
সাধু। তারা বলেছে, ঝুলি নিয়ে ভিক্ষে করে খাব তবু ওগাঁয় আর বাস করবো না। বড় মোড়ল এখন একা পড়েছে। দুই খান লাঙ্গল রেখেছে, তা নীলের জমিতেই যোড়া থাকে। এও পালাবার যোগাড়ে আছে। কর্ত্তা মহাশয়, আপনিও দেশের মায়া ত্যাগ করুন। গত বারে আপনার ধান গিয়াছে এইবারে যান যাবে।
গোলোক। যান যাওয়ার আর বাকি কি? পুষ্করিণীটির চার পাড়ে চাস দিয়াছে, তাহাতে এবার নীল কর্বে, তা হলেই মেয়েদের পুকুরে যাওয়া বন্দ হলো। আর সাহেব বেটা বলেছে যদি পূর্ব্ব মাঠের ধানি জমি কয় খানায় নীল না বুনি, তবে নবীন মাধবকে সাত কুটির জল খাওয়াইবে।
সাধু। বড়বাবু না কুটি গিয়াছেন?