পাতা:তারাচরিত.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তারাচরিত।

মনে হইত যে পূর্ণিমার চন্দ্রের ন্যায় তিনি বিরাজ করিতেছেন। কি আকর্ণ বিস্তারিত লোচন দ্বয়! কি অলৌকিক স্বগঠিত ভুজ চরণ অঙ্গুলি নিকর! কি অসাধারণ মনোহর আনন। তাঁহার সেই চম্পক বিজয়ী বর্ণ শারদীয় চন্দ্রমার ন্যায় শোভা পাইতেছে দেখিয়া কাহার না মনে হইত যে ইনি মুরপুরবাসিনী কোন দেবকন্যা মর্ত্যলোকে আসিয়া সুরতন মহাশয়ের বংশ অলঙ্কৃত করিতেছেন। তারাকে দেখিয়া টোডা নগরের সকলেই বলিতেন, তারা বিধাতার মানস সরোবরের স্বর্ণকমল। বস্তুতঃ একে এই রূপরাশি তারাতে বিরাজ করিতেছে, তাহাতে আবার তিনি দিন দিন যুদ্ধ-বিদ্যায় বিশারদ হইয়া উঠিলেন। এদিকে প্রকৃতিদেবীও নম্রতা, উদারতা ও মধুরতাদিগুণ নিচয়ে তাঁহাকে সুশিক্ষিত করিলেন। তারা অতি অল্পকালেই বিবিধ বিদ্যায় বিলক্ষণ পারদর্শিনী হইয়াছিলেন। তিনি অশ্বারোহণে এমনই পটু হইয়াছিলেন যে, অতি বেগগামী একটী অশ্ব হইতে আর একটী অশ্বে অনায়াসে যাইতে পারিতেন। তাহার বীরত্বের কথা অধিক কি বলিব তিনি এমনি তীর নিক্ষেপ করিতে জানিতেন যে, যাহাকে লক্ষ্য করিতেন তাহা প্রায় ব্যর্থ হইত না।

 যৎকালে দুরাত্মা আফগান তারার পিতা সুরতন মহাশয়ের নিকট হইতে টোডা কাড়িয়া লয়, তখন তারা অতি বালিকা ছিলেন; তথাপি তাঁহার এমনি বীরত্ব যে, তিনি অনেক গুলি অশ্বারোহী সৈন্য লইয়া টোডার উদ্ধারের চেষ্টা করেন। বীর বংশীয় বীর স্বভাবা তারা নিজে অনেকবার