পাতা:বিবিধ সমালোচন (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়).pdf/১০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আর্য্যজাতি সূক্ষ্ম শিল্প।
৯৫

এই সমস্ত পর্ব্বত খোদিত করিতে কত সময়, কত শ্রম ও কত অর্থ বায়িত হইয়াছে, তাহা মনে করিলে স্তব্ধ হইতে হয়।”

 দ্বিতীয় শ্রেণীর স্থপতি কীর্ত্তি সকলের মধ্যে চিলামব্রুমের মন্দিরের বর্ণনা উদ্ধৃত করিলাম।

 “চিলামব্রুমের মন্দিরগুলি ১৩৩২ পাদ দীর্ঘ, ৯৩৬ পাদ প্রস্থ, এবং ৩০ পাদ উচ্চ ও ৭ পাদ প্রস্থ প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত। এই সুবিস্তৃত প্রাঙ্গণের প্রায় মধ্যস্থলে ও ঈষৎ পূর্ব্বদিকে একটি চমৎকার বৃহদাকার মন্দির আছে। ইহা দীর্ঘে ২২ পাদ এবং প্রস্থে ৬৪ পাদ; ইহার সম্মুখে এক চাঁদনী আছে, উহা সহস্র স্তম্ভে সুশোভিত! উক্ত মন্দিরাভ্যন্তরস্থ মূর্ত্তিসকল ভারতবর্ষীয় যাবতীয় দেব দেবীর আদর্শে খোদিত। কিন্তু ইহার মধ্যে এরূপ একটি অত্যাশ্চর্য্য কীর্ত্তি আছে যে, তাহা ভূমণ্ডলের অন্য কোন স্থানেই দেখিতে পাওয়া যায় না। চতুষ্কোণাকার-স্তম্ভ-শ্রেণী-সংলগ্ন এক প্রস্তর-শৃঙ্খল খোদিত আছে, তাহা দীর্ঘে ১৪৬ পাদ এবং তাহার প্রত্যেক কড়া তিন পাদ দীর্ঘ। আশ্চর্য্যের বিষয় এই যে, ইহা ভিত্তিসংলগ্ন নহে, কেবল মাত্র স্তম্ভ হইতে স্তম্ভান্তরে সংযোজিত, অবশিষ্টাংশ শূন্যে ঝুলিয়া আছে। অপর এই মন্দিরের প্রবেশদ্বারে এরূপ উৎকৃষ্ট খোদিত মূর্ত্তি সকল এবং এরূপ দুইটী মনোহর শোভাসম্পন্ন পিল্পা আছে যে প্রসিদ্ধ শিল্প-নিপুন গ্রীকজাতিও উক্ত প্রকার গঠনে ঐরূপ অলঙ্কার যোজনা করিতে সমর্থ হয়েন নাই।”

 মহাবালীপুরের মন্দিরের প্রসঙ্গে লিখিত আছে, যে “এই নগরস্থ প্রধান মন্দিরে সাতিশয় সুন্দর গঠনে সুশোভিত মনুষ্য মূর্ত্তি সকল অদ্যাপিও বিদ্যমান আছে। একজন ইউরোপীয় স্বচক্ষে দেখিয়া লিখিয়াছেন তাহাদের কোন কোন অংশ বিশে-