নালন্দার পল্লীবাসীদের জল-তোলা দরোয়ান এসে হাজির । সে বলে, “ম্যানেজারের হুকুম নিয়ে ভেতরের যা-কিছু দেখতে হবে।" তার সঙ্গে এগিয়ে চললুম। চলতে চলতে হঠাৎ বাম ধারের দেওয়ালে ঝোলাম নোটিশ বোড়ের উপর নজর পড়ল। তাতে লেখ রয়েছে ভিতরের কোন অংশের একটুখানি ক্ষতি নোংরা কিংবা খতু ফেললে হাজার টাকা দণ্ড স্বরূপ দিতে হবে । দরোয়ান এগিয়ে চলেছে, আমরা তার পিছন পিছন চলেছি। সরু পরিষ্কার একটি রাস্ত দিয়ে আমাদের নিয়ে এল ম্যানেজার মশায়ের সামনে । ম্যানেজারবাবু বাঙালী, বেশ ভদ্রলোক, পুরনো একটি ঘরে চেয়ারে বসে, টেবিলে ভর দিয়ে কি লিখছিলেন, আমাদের দেখে আমাদের উদেশ্ব জিজ্ঞেস করলেন । আমরা সব বললাম। সন্তুষ্টচিত্তে দরোয়ান সঙ্গে দিয়ে ভিতরের যা-কিছু আছে সব দেখবার অমুমতি দিলেন। ইনি যে-ঘরে বসে ছিলেন সেই ঘরেই দেওয়ালে সংলগ্ন মাটি দিয়ে গড় একটি বিশাল যুদ্ধমূৰ্ত্তি। মূর্তিটির উপরের অংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মূৰ্ত্তিটির গায়ে চূণ-মুরকি দিয়ে প্লাষ্টার করা ছিল মনে হয়। o নালন্দীর কুমোর এখান থেকে একটা ভাঙা মন্দিরের কাছে এলুম। ছাদট। এর পড়ে গিয়েছে, শুধু দেওয়াল চারটে রয়েছে । দেওয়ালের গায়ে পাথরের খিলানের ভিতর নানা ভঙ্গিতে বুদ্ধমূৰ্ত্তি । খিলানের ভিতর ও বহিরের থামে নানা রকম কারুকার্য্য করা। এই ঘরের মাঝখানে মেজের উপর বড় একটি স্তুপ । চারদিকে অনেক রকম ডেকোরেটিভ ডিজাইন ও বুদ্ধদেবের মূৰ্ত্তি আছে। এই মন্দিরের দেওয়ালে সংলগ্ন একটা খুব উচু টবি আছে। এইটি ছোট ছোট ইটের তৈরি। এই ঢাবির উপরে উঠবার জন্য সিড়ি আছে। সিড়িগুলি বহুদিনের হলেও একটুও নষ্ট হয়নি—আনকোরা নূতনের মতই রয়েছে। সেখান থেকে বেরিয়ে এলাম নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে । বহুদূরব্যাপী কাকর-বিছান লাল সরু রাস্ত। তারই দু-পাশে অফুরন্ত সবুজ ঘাস । সামনে ছাত্রদের থাকবার ঘরগুলি খিলানের । দুই জন ছাত্র থাকবার উপযোগী। ঘরের দেওয়ালে তাক বসান আছে । সেই তাকে ছাত্রদের পড়বার বই, জাম-কাপড়,
পাতা:প্রবাসী (দ্বাত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৯৪
অবয়ব