পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

, .वॉर्डौ ఖ* আমার বয়স হচ্ছে কুটির শেষদিকের সাতাশ। এই পাকা সাতাশের রকম-সকম দেখে গষ্ঠীর লোকে খুশি হল । তারা কেউ বললে “নেতা হও”, কেউ বললে "সভাপতি হও”, কেউ বললে “উপদেশ দাও।” আবার কেউ বা বললে, “দেশটাকে মাটি করতে বলেছ।” অর্থাৎ, স্বীকার করলে দেশটাকে মাটি করে দেবার মতো অসামান্ত আমার আছে।. : () . এমন সময়ে বাটে পড়লুম। একদিন বিকেলবেলায় সামনের বাড়ির ছাতে দেখি, দশ-বারো বছরের একটি ছেলে খালি-গায়ে যা খুশি করে বেড়াচ্ছে। ঠিক সেই সময়ে চ খেতেখেতে একটা জরুরি কথা ভাবছি। ! 源 蠢 ভাবনাটা একদমে এক-লাইন থেকে আর-এক লাইনে চলে গেল। হঠাৎ নিতান্ত এই একটা অপ্রাসঙ্গিক কথা মনে উঠল যে, ওই ছেলেট। এই অপরাহের আকাশের সঙ্গে একেবারে সম্পূর্ণ মিশ খেয়ে গেছে ; কোনো একটা অন্তমনস্কতার ঠেলায় বিশ্বপৃথিবীর সঙ্গে শুর জোড় ভেঙে যায় নি। সমস্ত দিগ দিগন্তরকে ওই ছেলে তার সর্বাঙ্গ দিয়ে পেয়েছে, দিগম্বর শিবের মতো। কিসে যেন একটা ধাক্কা দিয়ে আমাকে মনে করিয়ে দিলে ষে, অমনি করেই নগ্ন হয়ে সমস্তর মধ্যে মগ্ন হয়ে নিখিলের আঙিনায় আমিও একদিন এসে দাড়িয়েছিলুম। মনে হল, সেটা কম কথা নয়। অর্থাৎ, আজও যদি বিশ্বের স্পর্শ প্রত্যক্ষ প্রাণের মধ্যে তেমনি করে এসে লাগত তা হলে ঠকতুম না। তা হলে আমার জীবন-ইতিহাসের মধ্যযুগে অকালে যুগান্তর-অবতারণার ষে সব আয়োজন করা গেছে তার ভার আমার চেয়ে যোগ্যতর লোকের হাতেই পড়ত, আর বাদশাই কুঁড়ের সিংহাসনটা আমি স্বামীরূপে দখল করে বসবার সময় পেতুম। সেই কুঁড়েমির ঐশ্বৰ্ষ আমি ষে একলা ভোগ করতুম তা নয়, এই রসের রসিক স্বারা তাদের জন্তে ভাণ্ডারের দ্বার খুলে দিয়ে বলা যেত, পীয়তাং ভূজ্যতাম্। চায়ের পাত্রটা ভুলে গিয়ে ভাবতে লাগলুম, যে পুলকটাতে আজ মন আবিষ্ট হয়েছে সেটার কথা সবাইকে বুঝিয়ে বলি কী করে। বয়স যখন ছত্রিশের নীচে ছিল তখন বলা-ই আমার কাজ ছিল, বুঝিয়ে বলার ধার ধারতুম না। কেননা, তখন তেপান্তর মাঠের মাঝখানটাতে আমার ঘোড়া ছুটছে, যুরো না বুঝে কিছুতেই ছাড়ে না তারা আমার ঠিকানা পায় নি। আজ পনেরো-ষোলো বিশ-পচিশ আশি-পচাশি প্রভৃতি নানা-বয়সের প্রাচীন লোকের ঠেসাঠেলি ভিড়ের মধ্যে এসে পড়েছি। ওদের বোঝাব কী করে, এই ছৰ্তাবনা এখন ভুলে থাকাই শক্ত। মুশকিল এই যে, পৃথিবীতে ছভিক্ষ আছে, মশা আছে, পুলিল আছে, স্বরাজ পররাজ দ্বৈরাজ নৈরাজের ভাবনা আছে, এরই মধ্যে ওই গাখোলা ছেলেট দিনের শেষ প্রহরের বেকার বেলাতে ছাদের উপরে ঘুরে