পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কথা পরদিন বেলা গেলে গোবিন্দ একাকী । বাহিরিলা ; পাঠানেরে কহিলেন ডাকি, ‘অস্ত্র হাতে এসো মোর সাথে P ভক্তদল ‘সঙ্গে যাব’ ‘সঙ্গে যাব’ করে কোলাহল— গুরু কন, “যাও সবে ফিরে । দুই জনে কথা নাই ধীরগতি চলিলেন বনে নদীতীরে। পাথর-ছড়ানো উপকূলে বরষার জলধারা সহস্ৰ আঙুলে কেটে গেছে রক্তবর্ণ মাটি । সারি সারি উঠেছে বিশাল শাল, তলায় তাহারি ঠেলাঠেলি ভিড় করে শিশু তরুদল আকাশের অংশ পেতে । নদী হাটুজল ফটিকের মতো স্বচ্ছ, চলে এক ধারে গেরুয়া বালির কিনারায় । নদীপারে ইশারা করিল গুরু ; পাঠান দাড়ালে । নিবে-আসা দিবসের দগ্ধ রাঙা অালো বাদুড়ের পাখ-সম দীর্ঘ ছায়া জুড়ি পশ্চিমপ্রান্তরপারে চলেছিল উড়ি নিঃশব্দ আকাশে । গুরু কহিলা পাঠানে, ‘মামুদ, হেথায় এসো, খোড়ো এইখানে ? উঠিল সে বালু খুড়ি একখণ্ড শিলা অঙ্কিত লোহিত রাগে । গোবিন্দ কহিলা, ‘পাষাণে এই-যে রাঙা দাগ, এ তোমার আপন বাপের রক্ত । এইখানে তার মুগু ফেলেছিস্থ কেটে, না শুধিয়া ঋণ, না দিয়া সময় । আজ আসিয়াছে দিন, , রে পাঠান, পিতার স্বপুত্র হও যদি খোলো তরবার— পিতৃঘাতকেরে বধি