পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬৩২ রবীন্দ্র-রচনাবলী স্বনরক্সপে বুঝাইয়া” বলেন : আমাদের বাংলাভাষার ব্যাকরণ র্যাহারা গড়িতে যাইবেন তাহদের ইহা মনে রাখা উচিত যে, তাহার ভাষায় যাহা আছে তাহারই প্রয়োগ-প্রকৃতি গঠনপ্রণালীর নিয়মাদি কিরূপ তাহ ব্যাখ্যা করিবেন মাত্র , কেহ কিছু গড়িবেন না। ••• শিক্ষার বিস্তারের জন্তা রচনার ভাষা যত কথিত ভাষার নিকটবতী হইবে ততই সুফল ফলিবে । ভাষা অর্থে যদ্বারা ভাষণ করা যায়, সুতরাং তাহা কথিত ভাষার নিকটবতী হওয়াই উচিত । “তৎপরে শ্রীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয় বলেন, হীরেন্দ্রবাৰু যাহা বলিয়াছেন, প্রবন্ধের আলোচ্য বিষয়ে তদতিরিক্ত বলিবার আর কিছুই নাই ; নিঃশেষ করিয়া সকল কথার উত্তর দিয়াছেন। . ভাষা যে আমরা নিজে ইচ্ছা করিলে গড়িতে পারি ভাঙিতে পারি এরূপ নহে। সংস্কৃতের সহিত বাংলার ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ সহজে বুঝা যায়,কিন্তু কোথায় কোথায় কিরূপ পার্থক্য আছে সেগুলি লক্ষ করাই এখন আবশ্বক। তবেই ইহার বর্তমান আকৃতি জানা যাইবে, তবেই ব্যাকরণ গঠনের চেষ্টা হইতে পরিবে । আমারও মনে হয় যে, বাংলাব্যাকরণ সংস্কৃতমূলক হইবে কেন। সংস্কৃতশবের বাহুল্য বাংলায় বেশি বলিয়াই ভাষার গঠনাদিও সংস্কৃতব্যাকরণানুসারে করিতে হইবে ? বাংলাভাষার প্রকৃতি কাঠামো যে সম্পূর্ণ তফাত ইহা না বুঝিলে চলিবে কেন । তবে সংস্কৃতব্যাকরণ আলোচনা করা আবশ্বক, নতুবা আমরা ঠিক পথে চলিতে পারিব না।” - সভাপতি শ্ৰীসত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর র্তাহার বক্তব্যে বলেন : ••• আজকার প্রবন্ধের আলোচনায় দেখা গেল, মত দ্বিবিধ হইয়াছে। সংস্কৃতানুসারে ব্যাকরণ আর বাংলাভাষার প্রকৃতিগত ব্যাকরণ । উভয়ের সামঞ্জস্য আবশ্বক ... আমার নিজের মনের ঝোক শাস্ত্রীমহাশয়ের মতের সঙ্গেই মিলে । লিখিত ভাষা কথিত ভাষায় প্রভেদ ষত কম থাকে ততই ভালো । পরিষদের পঞ্চম মাসিক অধিবেশনে ( ১২ আশ্বিন ১৩০৮ ) রবীন্দ্রনাথ ‘বাংলা কৃৎ ও তদ্ধিত প্রবন্ধ পাঠ করেন। ব্যোমকেশ মুস্তফী মহাশয় এই প্রবন্ধের “সংগ্রহাতিরিক্ত আরও কতকগুলি প্রত্যয়ের উদাহরণ” সভায় উপস্থিত করেন। উহ। রবীন্দ্রনাথের প্রবন্ধের “পরিশিষ্টরূপে গৃহীত ও মুদ্রিত হয়” । সভার আলোচনায় ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন : ••• বাংলাবর্ণমালা সংস্কারের পূর্বে বাংলাব্যাকরণ ভাববার সময়ই এখনও হয় নি... । আমার বোধ इब्रे, ব্যাকরণের চেষ্টা রেখে দিয়ে এখন পরিষৎ শব্দ সংগ্রহ করুন । * ১ দ্রষ্টব্য বঙ্গীয়-সাহিত্যপরিষদের কার্যবিবরণ– ১৩০৮ (সা. প. প. – পৃ. ১ly•-১IJ• ) । ২ বাংলা কৃৎ ও তদ্ধিত— ব্যোমকেশ মুস্তফী : সা. প. প. ৮ম ভাগ ৪র্থ সংখ্যা পৃ. ২২৯-২৪° । দ্রষ্টব্য সম্পাদকীয় মন্তব্য, ঐ পৃ. ২৪১ ৷