পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় \&:) o (Y পাখির নীড়ের গান আকাশ অামায়— ফুলন্ত গাছের গান ওগো নদী— প্রথম দৃষ্ঠ ! বনপথ নবযৌবনের দল প্রাণের বেগে বাহির হইয় পড়িয়ছে। দলের মধ্যে প্রবীণ দাদা প্রাণের চাঞ্চল অশ্রদ্ধা করেন। তিনি উপদেশগৰ্ভ চৌপদী রচনা করিয়া তাহার অর্থ ব্যাখ্যা করিতে উৎসুক,— নবযৌবনের দল তাহাতে কর্ণপাত করিতে অনিচ্ছুক। নবযৌবনদলের নেতা জীবনসর্দারের প্রবেশ। কথাপ্রসঙ্গে স্থির হইল, জগতে চিরকালের যে-বুড়োটা যৌবন-উৎসবের আলোটাকে ফু দিয়া নিবাইয়৷ অন্ধকার করিয়া দেয় তাহাকে বন্দী করিয়া আনিয়া এবার বসন্ত-উৎসবের খেল খেলিতে হইবে । গান। ওরে ভাই ফাগুন লেগেছে— বহুবিবাহ (বশীকরণ ) প্রহসনটিকে ফাল্গুনীর পূর্বে জুড়িবার উদ্দেশ্বে রবীন্দ্রনাথ যাহা লিখিয়াছিলেন, নিম্নে মুদ্রিত হইল।” অন্নদ ] বহুবিবাহ কাকে বলে এবার সেটা নতুন করে বুঝেছি। অtশু। কী রকম শুনি । অন্নদা। একের সঙ্গেই আমাদের বহুবার করে মিলন হচ্ছে। একটি পুরাতনকেই আমরা বারে বারে নূতন করে পাচ্ছি। আশু । আমি তো এই তত্ত্ব তোমাকে এর আগে বোঝাতে চেয়েছিলুম, তখন তুমি কান দাও নি। অন্নদা। এখন ভালো গুরু পেয়েছি বলেই সব বোঝা এত সহজ হয়ে গেছে । তোমাকেও কতবার অামি বোঝাতে চেয়েছি, মন্ত্র জিনিসটা খুবই সত্য সন্দেহ নেই, কিন্তু সে তো পুথির মন্ত্র নয়— মন্ত্র আছে চোখে মুখে হাসিতে ইশারায় । আমার কথা বিশ্বাস কর নি— এখন মন্ত্রদাতা যেমনি পেয়েছ অমনি সব সন্দেহ ঘুচে গেছে। আশু । চললেম । এক ঘণ্টার মধ্যেই যাবার কথা আছে। আর কুড়ি মিনিট বাকি । | অন্নদা। একটা কথা বলে নিই। তোমার তো অনেক কবিবন্ধু আছে— আমাদের এই বহুবিবাহের উৎসবে একটি নাটক ফরমাশ দিতে চাই । আশু । বিষয়টা কী হবে বলে দেখি । জন্নদা। হারাধনকে ফিরে পাওয়া । আশু। যেমন মৃত্যুর ভিতর দিয়ে আমরা পুরোনো জীবনকে আবার নতুন করে পাই । ১ অন্নদা। হতে পারে না কী বলছ । হয়েছে, আবার হতে পারে না কী । একবার হয়েছে, এই আবার দু-বার হল, তুমি বলছ হতে পারে না ! (বশীকরণ, পঞ্চম অঙ্ক রবীন্দ্র-রচনাবলী সপ্তম খণ্ড পৃ. ৩৮৩ )— এই উক্তির অনুবৃত্তিরূপে সংযোজনাংশটি পড়িতে হইবে।