পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (দ্বাবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গল্পগুচ্ছ \రిe দ্বাদশ পরিচ্ছেদ স্বকুমারী। সতীশ । সতীশ । কী মাসিমা । স্বকুমারী। কাল যে তোমাকে খোকার কাপড় কিনে আনবার জন্য এত করে বললেম, অপমান বোধ হল বুঝি। সতীশ । অপমান কিসের মাসিমা । কাল ভাদুড়ি-সাহেবের ওখানে আমার নিমন্ত্রণ ছিল তাই— স্বকুমারী। ভাদুড়ি-সাহেবের ওখানে তোমার এত ঘন ঘন যাতায়াতের দরকার কী, তা তো ভেবে পাই নে। তারা সাহেব মানুষ, তোমার মতে অবস্থার লোকের কি তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা সাজে। আমি তো শুনলেম, তোমাকে তারা আজকাল পোছে না, তবু বুঝি ওই রঙিন টাইয়ের উপর টাইরিং পরে বিলাতি কাতিক সেজে তাদের ওখানে আনাগোনা করতেই হবে। তোমার কি একটুও সম্মানবোধ নেই। তাই যদি থাকবে তবে কি কাজকর্মের কোনো চেষ্টা না করে এখানে এমন করে পড়ে থাকতে। তার উপরে আবার একটা কাজ করতে বললে মনে মনে রাগ করা হয়, পাছে ওঁকে কেউ বাড়ির সরকার মনে করে ভুল করে । কিন্তু, সরকারও তো ভালো— সে খেটে উপার্জন করে থায় । সতীশ । মাসিম, আমিও হয়তো তা পারতেম, কিন্তু তুমিই তো— স্বকুমারী। তাই বটে। জানি, শেষকালে আমারই দোষ হবে। এখন বুঝছি তোমার বাপ তোমাকে ঠিক চিনতেন। তাই তোমাকে এমন করে শাসনে রেখেছিলেন । আমি আরো ছেলেমানুষ বলে দয়া করে তোমাকে ঘরে স্থান দিলেম, জেল থেকে বাচালেম, শেষকালে আমারই দোষ হল। একেই বলে কৃতজ্ঞতা ! আচ্ছা, আমারই না হয় দোষ হল, তবু যে কদিন এখানে আমাদের অন্ন খাচ্ছ, দরকারমত দুটো কাজই না হয় করে দিলে। এমন কি কেউ করে না। এতে কি অত্যন্ত অপমান বোধ হয় । সতীশ । কিছু না, কিছু না। কী করতে হবে বলে, আমি এখনি করছি। মুকুমারী। থোকার জন্ত সাড়ে সাত গজ রেনবো সিদ্ধ চাই– আর একটা সেলার স্কট— সতীশের প্রস্থানোদ্যম শোনো শোনো, ওর মাপটা নিয়ে যেয়ো, জুতো চাই ।