পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (পঞ্চদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

అర్చి রবীন্দ্র-রচনাবলী রাজা। এবার ওই কে আসে। কবি । বলব না। চিনতে পারেন কিনা দেখতে চাই দখিনহাওয়া শুকনো পাতা কে যে ছড়ায় ওই দূরে উদাসকরা কোন স্বরে। ঘরছাড়া ওই কে বৈরাগী জানি না যে কাহার লাগি ক্ষণে ক্ষণে শূন্ত বনে যায় ঘুরে । চিনি চিনি হেন ওরে হয় মনে, ফিরে ফিরে যেন দেখা ওর সনে । ছদ্মবেশে কেন খেল, জীর্ণ এ বাস ফেলে ফেলো, প্রকাশ করে চিরনূতন বন্ধুরে । রাজা। ওহে কবি, তোমার এ পালাটা কী রকম করে তুলেছ। বরযাত্রীরই ভিড়, বর কোথায় । তোমার ঋতুরাজ কই । কবি । ওই যে, এই খানিক আগে দেখলেন । রাজা। ওই জীর্ণ বসন পরে শুকনো পাতা ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে ? ওতে তে৷ নবীনের রূপ দেখলুম না । ও তো মুর্তিমান পুরাতন । কবি। তবে তো চিনতে পারেন নি, ঠকেছেন। আমাদের ঋতুরাজের যে গায়ের কাপড়খানা আছে, তার এক পিঠে নূতন, এক পিঠে পুরাতন । যখন উলটে পরেন তখন দেথি শুকনো পাতা, ঝরা ফুল ; আবার যখন পালটে নেন তখন সকালবেলার মল্লিকা, সন্ধ্যাবেলার মালতী,– তখন ফাঙ্কনের আম্রমঞ্জরি, চৈত্রের কনকচাপা । উনি একই মানুষ নূতনপুরাতনের মধ্যে লুকোচুরি করে বেড়াচ্ছেন। রাজা । তাহলে নবীন মুর্তিটা একবার দেখিয়ে দাও । আর দেরি কেন । কবি । ওই-ষে এসেছেন । পথিকবেশে, নূতনপুরাতনের মাঝখানকার নিত্যযাতায়াতের পথে । রাজা । তোমার পলাতক বুঝি পথে-পথেই থাকেন ? কবি । হা, উনি বাস্তছাড়ার দলপতি, আমি ওঁরই গানের তলপি বয়ে বেড়াই।