পাতা:বিদ্যাসাগর (বিহারীলাল সরকার).pdf/২৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২৬
বিদ্যাসাগর।

সৌসাদৃশ্য অল্পই লক্ষিত হয়। তথাপি ইহা কখনই অস্বীকার করা যাইতে পারে না যে, এক জন সংস্কৃতিজ্ঞের পক্ষে উক্ত দর্শন- শাস্ত্রের জ্ঞান নিতান্তই প্রয়োজনীয়। ইংরেজী বিভাগসম্বন্ধে আমার মন্তব্যগুলি রিপোর্টের স্থানান্তরে উল্লেখ করিব। যদি কৌন্সিল অব এডুকেশন আমার মন্তব্যগুলি গ্রহণ করেন, তাহা হইলে যে সময়ের মধ্যে ছাত্রের দর্শন শ্রেণীতে উন্নীত হইবে, সেই সময়ের মধ্যে তাহাদিগের শিক্ষিত ইংরেজী ভাষাজ্ঞান অনায়াসেই, তাহাদিগকে ইউরোপখণ্ডের দর্শনশাস্ত্রের জটিল বিষয়সমূহ প্রণিধান করিতে সমর্থ করিবে। তাহারা পাশ্চাত্য দর্শনশাস্ত্রের সহিত তাহাদিগের স্বদেশীয় দর্শনশাস্ত্রের তুলন করিতে সহজেই পারগ হইবে। যুবকেরা এই পদ্ধতি অনুসারে শিক্ষিত হইলে সহজেই প্রাচীন হিন্দু-দর্শনশাস্ত্রের ভ্রম-প্রমাদাদি প্রদর্শন করিতে সমর্থ হইবে; কিন্তু যদি তাহাদিগকে হিন্দু-দর্শন- শাস্ত্রের চান ইউরোপীয়দিগের নিকট শিক্ষা করিতে হয়, তবে উপরোক্ত সুবিধা তাহাদিগের কখনই ঘটিয়া উঠিবে না। ভারতবর্ষে প্রচলিত যাবতীয় দর্শনশাস্ত্র শিক্ষার ফলে ছাত্রের। সহজেই অনুভব করিতে পারিবে যে, ভিন্ন ভিন্ন দর্শনশাস্ত্র সম্প্রদায়ের প্রবর্তকগণ পরস্পরের ভ্রমপ্রমাণাদি প্রদর্শন করিবার ক্রট করেন নাই। ছাত্রের পক্ষে এ সম্বন্ধে স্বাধীনভাবে বিচার করিয়া তথ্য নির্ণয় করিবার যথেষ্ট সুবিধা রহিয়াছে। তাহার ইউরোপীয় দর্শনশাস্ত্রজ্ঞান, বিভিন্ন দর্শন-সম্প্রদায়ের দোষগুণ বিচারের পক্ষে প্রকৃষ্ট পথপ্রদর্শক হইবে।