“জানি শাহ্জাদী, কিন্তু আমি ত মুসলমান নহি, সুতরাং কোরাণের দণ্ড আমার প্রাপ্য নহে।”
“তুমি ইচ্ছা করিয়া শূলে যাইবে?”
“যদি তাহাই আপনার অভিপ্রেত হয় সানন্দে যাইব।”
“তবে যাও।”
খোজাদ্বয় ময়ূখের চক্ষু বাঁধিয়া তাহাকে স্কন্ধে উঠাইল এবং দ্রুতপদে স্থানান্তরে লইয়া গেল। কক্ষ পরিত্যাগ কালে ময়ূখ শুনিতে পাইলেন সে গুলরুখ্ বলিতেছেন, “শাহ্জাদী গোশা করেন নাই ত?”
ময়ূখ কক্ষ হইতে নীত হইলে শাহ্জাদী প্রস্থান করিলেন। যে স্থানে ময়ূখ শয়ন করিয়াছিলেন সে স্থানটি কক্ষ নহে, আগ্রা দুর্গের অন্তঃপুরে বিশালকায় প্রাচীর মধ্যে একটি গুপ্ত পথ মাত্র। জাহানারা বেগম প্রস্থান করিলে গুলরুখ্ তাঁহার পশ্চাৎ অনুসরণ করিতেছিলেন, এমন সময়ে তাতারী সহসা তাঁহার হস্তধারণ করিল। গুলরুখ্ বিস্মিতা হইয়া তাহার মুখের দিকে চাহিলেন। সে কহিল, “বেগম সাহেব, একটা কথা রাখিবে?” গুলরুখ্ হাত ছাড়াইয়া লইয়া কহিলেন, “কি কথা?”
“আগে বল রাখিবে?”
“না জানিয়া শুনিয়া কেমন করিয়া প্রতিজ্ঞা করিব?”
“তোমার খসমটা তল্লাক দাও।”
“কেন বল্ দেখি?”
“অমন কড়া খসম তুমি পোষ মানাইতে পারিবে না।”