পাতা:মহাত্মা গান্ধীর কারাকাহিনী - অনাথ নাথ বসু.pdf/৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তৃতীয় বার

বোকসরষ্ট

 ২৫ শে ফেব্রূয়ারী আমার প্রতি তিনমাস সশ্রম কারাবাসের আদেশ হইলে আমি যখন বোক‍্সরষ্টের জেলে বন্দী ভ্রাতৃবৃন্দ ও পুত্রের সহিত মিলিত হইলাম, তখন মনে করিয়াছিলাম, এই তৃতীয় বারের জেল সম্বন্ধে কিছু বলার বা লেখার আর প্রশ্লোজন হইবে না। কিন্তু মানুষের অন্য অনেক ধারণার মতই আমার এ ধারণাও মিথ্যা হইল। এইবার আমি যে অভিজ্ঞতা লাভ করিলাম তাহা অন্য দুইবারের অভিজ্ঞতা হইতে সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র, এবারকার শিক্ষা আমি বৎসরব্যাপী পরিশ্রমে ও অভ্যাসেও পাইতে পারিতাম না। জীবনের এই কয়টা মাসকে আমি অমূল্য মনে করি। এই অল্প দিনেই সত্যাগ্রহের কত ছবি আমার মনের মধ্যে ফুটিয়া উঠিয়াছিল, ২৫শে ফেব্রূয়ারীর আগের তুলনায় কতখানি বেশী শক্তি আমি লাভ করিয়াছি। এই জন্য ট্রান্সভাল গবর্ণমেণ্টের নিকট আমি কৃতজ্ঞ। গভর্ণমেণ্টের পক্ষীয়' অনেকে মনে স্থির করিয়াছিলেন, এবার আমার ছয়মাস জেল নিশ্চয়ই হইবে। আমার সঙ্গী, প্রবীণ, প্রসিদ্ধ ভারতবাসীগণ, আমার পুত্র— সকলেই ছয় মাসের জন্য দণ্ড ভোগ করিতেছিলেন। মনে মনে প্রার্থনা করিতেছিলাম, ভগবান্ করুন, লোকের আশা যেন পূর্ণ হয়।

 কিন্তু আমার বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযোগ ছিল না, সুতরাং ভয় হইতেছিল, বুঝি বা তিন মাস মাত্র দণ্ড হয়। হইলও তাহাই।

 দণ্ডাদেশ হইবার পর, মিঃ দাউদ মহম্মদ, মিঃ রুস্তমজী, মিঃ সোরাবজী, মিঃ পিল্পে, মিঃ হজুরা সিংহ, মিঃ লালবাহাদুর সিংহ প্রভৃতি সত্যাগ্রহীদের সাইত আনন্দে মিলিত হইলাম। জন দশেক ছাড়া আর সকল কয়েদীর