নহবি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ইহা যেন তাহার জীবনের আহরিত সব কিছু অভিজ্ঞতা হইতে সম্পূর্ণ পৃথক। বালক বিস্ময় বিস্ফারিত নেত্ৰে চাহিয়া দেখিলেন, আত্মীয় স্বজনের নগ্নপদে শ্মশানে বসিয়া আছেন । কেহ কেহ এক প্ৰান্তে বসিয়া উদাসীভাবে হুক| সেবন করিতেছেন। এ পরিবেশের সহিত তাহার কোন পরিচয় নাই । অকস্মাৎ এক মহাশূন্যতা তঁহার সমগ্ৰ চিত্তকে আবৃত করিয়া দিল। তাহার দৃষ্টির সম্মুখ হইতে দৃশ্যজগৎ অপসারিত হইয়া গেল, গভীর ধ্যানে তিনি মগ্ন হইয়া পড়িলেন । এই ধানলোক হইতে উৎসারিত এক অপার্থিব আনন্দ তাহার দেহ মনকে সেদিন প্লাবিত করিয়া দেয়, সৰ্ব্বত্র ইহা প্ৰবাহিত হইতে থাকে। এ পুরাতন কথাগুলি বৰ্ণনা করিবার সময়ে সেদিন যেন তিনি অপার্থিব আনন্দ সাগরে অবগাহন করিতে লাগিলেন । মহর্ষি তাহার স্মৃতি মন্তন করিয়া চলিলেন--আমি ও তৃষিত চাতকের মত উন্মুখচিত্তে এই অপূৰ্ব্ব কাহিনী শ্রবণ করিতে লাগিলাম। পূৰ্বেব্যাক্ত অপার্থিব আনন্দকে মহর্ষি মানস-আনন্দ বলিয়া বর্ণনা করেন । তিনি বলিয়া চলিলেন-বিশ্বপ্নাৰী আনন্দ সাগর হইতেই জগৎ সৃষ্ট ; তাহা হইতে জাত প্রবহমান সনাতন সত্যটি তঁহার মনশচক্ষে উদ্ভাসিত হইয়া উঠিল। তিনি বুঝিলেন, স্রষ্টার স্বরূপ জাগতিক সব কিছুকে অতিক্ৰম করিয়াই পরিব্যাপ্ত । এ নূতন অনুভূতি ও সত্যোপলব্ধিই তাহার ভবিষ্যৎ সাধকজীবনের ভিত্তিভূমি। ዪ9¢