পাতা:বারীন্দ্রের আত্মকাহিনী - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অরবিন্দের সাধন লাভ WSONSO বলিলাম, “আমি তো দেশের কাজে উৎসৰ্গিত-প্ৰাণ, কাম আবার কোথায় দেখলেন ।” লে। (সহস্যে) আছে বই কি, তুমি বুঝতে পার না। আমার কাছে শক্তি নাও, আধার শুদ্ধ হবে। কিছু দিন শুধু ঘি আর রুটি খাও, লবণ পৰ্যন্ত নয়। সকালে কেবল ফল মূল খাবে। দুই এক দিন দুইবেল তাহাই করিয়া লোভের জ্বালায় শেষটা যাই আরকি। অগত্যা সন্ধ্যার সময় লুকাইয়া খাসিরাও-এর বাড়ী গিয়া মাংস ডিম খাইয়া। তবে এ পৈতৃক লক্ষ টাকার প্রাণটা কোন গতিকে রক্ষা করি । মিষ্ট নয়, লবণ নয়, মাছ নয়, মাংস নয়, কেবল ঘি আর শুকনো রুটি ! বাপ৷ আমার এমন নীরস নিরস্তু ভগবান পাইয়া কাজ নাই, আপাততঃ দেশের কাজ ও যথারীতি অবাধ ভোজন চলুক, তাহার পর কৃচ্ছসাধনায় ভগবান লাভ পরে পশ্চাতে দুঃখের দিনে দেখা যাইবে । ভারতে দুর্ভিক্ষের মড়ক তো লাগিয়াই আছে, না খাইতে পাইয়া ভবিষ্যতে চিচি করা কিছুমাত্ৰই আশ্চৰ্য্য নয়। আর ভারত যদি বোমার ঘায়ে উদ্ধারই হইল। তাহা হইলে সে ষড়ৈশ্বৰ্য্যশালী স্বাধীন ভারতের ভগবান নিশ্চয়ই ভোগবিরোধী অনাহারী ভগবান হইবেন না। তখন চাই কি আবার বাঙলার তন্ত্র বঁচিলেও বঁচিতে পারে। এইরূপ সাত পাচ ভাবিয়া লক্ষ ক্ষিপ্তবাসনাতাড়িত আমি ফাকি দিয়াই একরকম সে কয়দিন কাটাইলাম। অরবিন্দ স্বভাবযোগী ও ধীরপ্ৰকৃতি, বরোদায় সকাল হইতে সন্ধ্যা অবধি পুস্তকের রাশির মধ্যে ডুবিয়া যে অসাধ্য জ্ঞানের তপস্যা র্তাহাকে করিতে দেখিয়াছি, তাহাতেই বেশ স্পষ্টই বুঝা গিয়াছিল যে, তিনি কোন অসাধারণ ধাতুর তৈয়ারী। কয়েক দিনের অনন্যমন সাধনায় লেলের সমস্ত যোগবল অরবিন্দে সঞ্চারিত হইয়া গেল, মাত্র তিন দিনে তিনি অচল নীরব ব্ৰহ্মে স্থিতি লাভ করিলেন । বিরোদা হইতে বোম্বাইয়ে আসিলে এই অপূর্ব সাধনা আরও ফুটিল, স্বতঃস্ফুৰ্ত্ত মন্ত্র আপনি উঠিতে লাগিল । VO)