বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (চতুর্থ খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৫৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পরীবানুর হাঁহলা

 এই পরীবানুর পালা-সম্বন্ধে ইহার সংগ্রাহক শ্রীযুক্ত আশুতোষ চৌধুরী মহাশয় বিগত ২৪শে জুলাই চট্টগ্রাম হইতে আমাকে যাহা লিখিয়া পঠাইয়াছেন তাহা নিম্নে উদ্ধৃত করিতেছি:—

 “পরীবানুর পালাটি ‘সুজাতনয়ার বিলাপেরই’ অনুরূপ; কিন্তু ইহার মধ্যে অন্য বৈশিষ্ট্যও আছে। বহু পূর্ব্ব হইতেই আমি আপনাকে ‘হাল্‌দা-ফাটা’ নামক পল্লীগীতির কথা লিখিয়া আসিতেছি। এই পালাটিও সেই জাতীয় গান। সাধারণতঃ সমুদ্রোপকূলবর্ত্তী স্থানগুলিতেই ‘হাল্‌দা-ফাটা’ গানের প্রচলন দেখা যায়। এই পালাগায়ক সারেঙ্গ, তানপুরা, খঞ্জরি কি অন্য প্রকারের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে না। প্রকৃতির সাধারণ সুর ও সমুদ্রের সোঁ সোঁ শব্দসংযোগে তাহারা যেন এই গানের তালমান রক্ষা করিয়া থাকে। গায়ক পদপূরণ করিবার সময় অতি সুন্দর ও স্বাভাবিক নিয়মে ‘রে’ শব্দটির দ্বারা সুর যোজনা করিয়া লয়। ইহার কৌশলও অভিনব এবং মৌলিক। বঙ্গদেশে সঙ্গীতশাস্ত্রের যদি কোন মৌলিক গবেষণা হয়, তবে হাল্‌দা-ফাটা গান হইতে অনেক সুরের উপকরণ সংগৃহীত হইবে। গান করিবার সময় তাল যন্ত্র ছাড়া সুরের সামঞ্জস্য রক্ষা করিতে হয় বলিয়া এই পালারচকেরা শব্দবিন্যাস ও ছন্দের প্রতি সর্ব্বদা সতর্ক দৃষ্টি রাখিয়া থাকে। অধিকাংশ হাল্‌দা-ফাটা গানে উপান্ত্য স্বরের মিল আছে।

 এই পরীবানুর পালার ঐতিহাসিকত্ব প্রমাণ করিতে কোন বেগ পাইতে হয় না। সুজাতনয়ার বিলাপের ভূমিকাখানি ইহার সহিত জুড়িয়া দেওয়া যায়। মােটের উপর এই পালাগানটিকে মোগল ইতিহাসের কয়েক পৃষ্ঠা বলা যাইতে পারে। চারিবৎসর পূর্ব্ব হইতে আমি আপনাকে এই পালার বিবরণ জানাইয়াছি। আপনিও অনেক জায়গায় তাহার উল্লেখ করিয়াছেন। ‘ডবলমুরিং’ থানার অন্তর্গত ‘আনরাবাদ’ গ্রামনিবাসী খলিলুর