পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (প্রথম বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রণজিৎ সিংহ ও ইংরাজী। পৰ্যন্ত যাহাতে বাণিজ্যের বিশেষ উন্নতি হয়—সেই বিষয়ে দৃষ্টি রাখিবার জন্যই রহিয়াছেন এইরূপ মনে করিতেন। অর্থে পাৰ্জন একমাত্ৰ উদ্দেশ্য হওয়ায় ডিরেক্টারগণ মনে করিতেন যে, সদ্য লাভজনক স্থান ব্যতীত অন্য কোন স্থান সংক্রান্ত কোন রূপ তথ্যসংগ্রহের আবশ্যক নাই এবং তাহাতে প্রচুর অনাবশ্যক ব্যয়সম্ভাবনা । এই নিমিত্ত প্ৰত্যেক গবৰ্ণর জেনেগালের কাণে এই মন্ত্র দিয়া দিতেন যে, তাহারা বণিক সম্প্রদায় মাত্র, রাজ্যসংস্থাপনের কোন বাসনা রাখেন না এবং শান্তিরক্ষাই যেন গবৰ্ণরদিগের একমাত্ৰ উদ্দেশ্য হয় । এই মন্ত্রে দীক্ষিত গবৰ্ণর জেনেরালগণও সাধ্যমত তদনুরূপ কাৰ্য্য করিতেন। ১৭৯৮ খৃষ্টাব্দে লর্ড মনিংটন (যিনি পরে মার্কাইস অব ওয়েলেসলি হন) গবৰ্ণর জেনেরাল হইয়া এদেশে আসেন । তাহার মনে শান্তিরক্ষার বাসনা থাকিলেও তাহার আগমন কাল হইতে র্তাহার প্রত্যাবৰ্ত্তন কাল ১৮০৫ সাল পৰ্য্যন্ত তিনি র্তাহার প্ৰেভূদিগকে যুদ্ধজড়িত রাখিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। ১৮০৩ খৃষ্টাব্দে মহারাষ্ট্রীয়দিগের সহিত যুদ্ধ আরম্ভ হয়, এবং তাহার পর দুই বৎসর। পৰ্য্যন্ত সেই যুদ্ধ ধীরে ধীরে চলিতেছিল। কোষাগার শূন্য এবং ব্যবসায়ে কোনই লাভ হইতেছে না দেখিয়া ডিরেক্টারগণ মন্ত্রণা করিয়া স্থির করিলেন যে, ভারতীয় অধ্যক্ষ র্তােহাঁদের আজ্ঞা বিশেষরূপে পালন না করিয়া, নিজের জন্য “মারকুইস’ উপাধি সঞ্চয় করিলেন এবং তঁহাদের যে ব্যবসায়ের এত উন্নতি হইয়াছিল। তাহাও উৎসন্ন হইতে বসিয়াছে। তঁাহারা এই অনিষ্টকারীকে গৃহে ফিরাইয়া অপর একজন শীতলমস্তিষ্ক ব্যক্তিকে ভারতে প্রেরণ করিতে কৃতসঙ্কল্প হইলেন। তঁহাদের রাজ্যবিস্তারলোলুপ কোন ব্যক্তির আবশ্যক ছিল না। ওয়েলেসলির পূর্ববৰ্ত্তা” বড়লাট বহুসন্মাননীয় ভগ্নস্বাস্থ্য বৃদ্ধ লর্ড কর্ণওয়ালিসকে রতে এই সময়ে শান্তিস্থাপনের একমাত্ৰ উপযুক্ত লোক বিবেচনায় তঁাহাকে ঐ কাৰ্য্যে পুনরায় যাইবার জন্য অনুরোধ করা হইল, তিনিও স্বীকৃত হইলেন। ১৮০৫ সালের অক্টোবর মাসের প্রারম্ভে কলিকাতায় পদাৰ্পণ করিয়াই তিনি তঁহার প্রভুগণের ঈপ্সিত পথ অবলম্বন করিলেন বটে, কিন্তু তাহার অভীষ্ট পথে কিয়দ্দূর অগ্রসর না হইতে হইতে মৃত্যু তাহাকে সরাইয়া লইল । ।