পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (প্রথম বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাবুলরাজ রত্নপাল । @ যৎকালে হজাজ শ্রুত হইলেন যে, আবদর রহমান কেবল লুণ্ঠন করিয়াই প্ৰত্যাবৃত্ত হইয়াছেন, কাবুল অধিকার করিতে সমর্থ হন নাই, তখন তিনি আবদর রহমনের প্রতি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হইলেন। আবদর রহমান হজাজের ক্ৰোধের বিযয় অবগত হইয়া আত্মরক্ষার জন্য প্ৰবৃত্ত হন। তিনি জানিতেন যে, হজাজ যাহার উপর ক্রুদ্ধ হন, তাহার পক্ষে জীবনের ট্যাশা নিৰ্ব্বাণোন্মুখ দীপশিখার ন্যায় হইয়া উঠে। অগত্যা তিনি হজাজের হস্ত হইতে নিস্কৃতিলাভের চেষ্টা দেখিতে লাগিলেন। আবদর রহমান অন্য কোন উপায় না দেখিয়া রত্নপালের সহিত সন্ধি বন্ধন ও তাহার আশ্রয় গ্ৰহণ করেন। রত্নপাল আবদর রহমানের সহিত মিলিত হইয়া হজাজের বিরুদ্ধে উখিত হইলেন। উভয় পক্ষে অনেক দিন ব্যাপিয়া ঘোরতর যুদ্ধ চলিতে লাগিল, হজাজ কোন রূপে কাবুলজয়ে সমর্থ হইলেন না। একে রত্নপালকে তিনি পরাজয় করিতে পারেন নাই, তাহার উপর তাহার পরাক্রান্ত সেনাপতি অবদর রমহন। তাহার সহিত মিলিত হওয়ায় হজাজের পক্ষে কাবুলজয় একরূপ অসম্ভব হইয়া উঠিল। তথাপি তাহার হৃদয় যেরূপ উচ্চাশায় পরিপূর্ণ ছিল, তাহাতে তিনি সহসা ভগ্নোস্থ্যম হন নাই। তিনি কাবুলজয়ের বিশেষতঃ আবদর রহমনের প্রতি শাস্তি বিধানের জন্য অনেক প্রকার চেষ্টা করিয়াছিলেন, কিন্তু কিছুতেই কৃতকাৰ্য্য হইতে পারেন নাই । ইহার পরে আবদর রহমনের ভাগ্য পরিবৰ্ত্তিত হইতে আরম্ভ হইল। দুই জন প্ৰতিদ্বন্দী কোন এক উদ্দেশ্যে মিলিত হইয়াছিলেন। সে উদ্দেশ্য কিঞ্চিৎ পরিমাণে সাধিত হইলে উভয়ের মধ্যে ধীরে ধীরে মনোমালিন্যের সুচনা হইল । আবদর রহমানের মনে আশঙ্কা হইল যে, রত্নপাল তাহাকে বিশ্বাসঘাতকতা পূর্বক হজাজের হস্তে সমর্পণ করিবেন, এবং হজাজ কোন রূপে র্তাহাকে হস্তগত করিতে পারিলে যে নির্দয় ভাবে হত্যা করিবেন তাহাতে । সন্দেহ নাই। এইরূপ মনে করিয়া তিনি হজাজের হস্তে হত হওয়া অপেক্ষা । আত্মহত্যাকে শ্রেয়ঃ মনে করিলেন। সেই সংকল্প সাধনের জন্য আবদর রহমান একটি উচ্চস্থান হইতে আপনাকে নিক্ষেপ করিয়া চিরদিনের জন্য ধরণীর ।