পাতা:ইতিকথার পরের কথা.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

খায়াঃ ধারে না, ভাতকাপড়ের ধারও ধারে না--সন্দেহ ‘অবিশ্বাস নিয়ে নিজে নিজে জরে পুড়ে মরার বেশী তার কোন অধিকার নেই, মুখ ফুটে কথাটি কওয়ার পর্যন্ত নয়! তাই না তার এত ঝোক অন্ধ বিশ্বাসের দিকে, এত দরকার নির্ভেজাল বিশ্বাস বজায় রাখার। , , , , দু-তিন সপ্তাহ কাটে কি কাটে না মহিমের আবেগময় উৎসাহ উদ্দীপনা ধোয়ার মতই শূন্যে উপিয়ে দেয় মহানগরী, মুখ থেকে মুছে নেয় অহেতুক আশা আনন্দের জ্যোতি। বিয়ের আংটি-বেচা পয়সা আসে ফুরিয়ে, ট্রামে বাসে শহর চযে, বেড়ানোটা বেড়ানোর পর্যায় থেকে নেমে আসে কষ্টকর হঁাটাইটির "প্রক্রিয়ায়, দেহ টের পেতে শুরু করে শ্রান্তি ক্লান্তি আর খিদে কাকে বলে, মন । আবার নতুন করে জানতে থাকে অনেক দিনের জানা কথাটা যে সংসারে মানুষের বঁাচাটা বড়ই কঠিন করে দিয়েছে মানুষ। কৈলাস জানত। এরকম হবে। বড় বড় কথায় মুখর ছেলেটা চুপচাপ হয়ে আসবে, শুকিয়ে শরীরটা রোগ হয়ে যাবে, মুখে দেখা দেবে রুক্ষ কঠিন ভাব, চোখে ফুটবে নালিশ আর জালা। সেও খোজা খুজি করছিল যদি কিছু জুটিয়ে দেওয়া যায় মহিমকে। কিন্তু আসল মুশকিল ছিল এই যে এতকাল মহিম শুধু বাপদাদার সঙ্গে চাষের কাজেই হাত লাগিয়েছিল, অন্য সব কাজেই সে একেবারে আনাড়ি । শেষ পর্যন্ত তাকে যেখানে হোক শিক্ষানবীশ মজুর হয়ে ঢুকতে হবে সন্দেহ ছিল মা কৈলাসের । কিন্তু সেটাও যেমন ছিল খোজখবরের ব্যাপার তেমনি দরকার ছিল মহিমের এরকম কাজ মেনে নেবার মত অবস্থা তৈরি হবার । মহিম কাজের চেষ্টায় ঘুরছে, ব্যর্থতার ক্ষোভে জলছে, হতাশার সঙ্গে লড়ছে আর চুপচাপ শুকনো মুখে আকাশপাতাল ভাবছে—এই দেখে কৈলাস শনিবার বাড়ি গিয়েছিল। গাদার পরনে দেখেছিল আটহাত একটি নতুন শাড়ি, তার ভাই ভূতো অনেক চেষ্টায় যোগাড় করে দিয়েছে। আট হাতি কাপড় আঁটি করে পরতে হওয়ায় তাকে দেখে টের পাওয়া যাচ্ছিল টানাটানির শাক-ভাত খেয়েও বিয়ের পর কি রেটে যৌবনের বাধুনি আসতে শুরু করেছে তার দেহে। No br