সেখানেই এলাইয়া শুইয়া পড়িল । সহসা আজ প্ৰথম মনে উদয় হইল, সমস্ত মিথ্যা-সব ফাকি । এই সংসার, স্ত্রী-কন্যা, স্নেহ-প্ৰেম সমস্তই আজ র্তাহার কাছে এক নিমেষে মরুভূমির মরীচিকার মত উবিয়া গেল । wif কে রে, বিমল ? আয় বোন বোস। বলিয়া নরেন্দ্ৰ শয্যার উপরে, উঠিয়া বসিল। তাহার উভয় ওষ্ঠ্যপ্ৰান্তে ব্যথার যে চিহ্নটুকু প্ৰকাশ পাইল, তাহার বিমলার দৃষ্টি এড়াইল না। অনেকদিন দেখিনি দিদি, ভাল আছিস ত ? বিমলার চোখ-দুটি ছলছল করিয়া উঠিল। সে ধীরে ধীরে শয্যাপ্ৰান্তে আসিয়া বলিল, কেন দাদা তোমার অসুখের কথা আমাকে এতদিন জানাও নি ? অসুখ তেমন তো কিছুই ছিল না বোন, শুধু সেই বুকের ব্যথাটা একটু বিমলা হাত দিয়া এক ফোটা চোখের জল মুছিয়া ফেলিয়া বলিল, একটু বই কি ? উঠে বসতে পার না। —ডাক্তার কি বললে ? ডাক্তার ? ডাক্তার কি হবে রে, ও আপনি সেরে যাবে । এ্যা ! ডাক্তার। পৰ্য্যন্ত ডাকাও নি ? ক’দিন হলো ? নরেন্দ্র একটুখানি হাসিয়া বলিল, ক’দিন ? এই ত সেদিন রে ; দিন-সাতেক বোধ হয় ! সাত দিন ! তা হলে বেী সমস্ত দেখেই গেছে। না না, দেখে যায়নি বোধ হয়-অসুখ আমার নিশ্চয় সে বুঝতে পারেনি। আমি তার যাবার দিনও উঠে গিয়ে বাইরে বসেছিলুম। না না, হাজার রাগ হোক, তাই কি তোরা পারিস বোন ? Σ Θ
পাতা:দর্পচূর্ণ - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৩
অবয়ব