পাতা:মানিক গ্রন্থাবলী - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সহরবাসের ইতিকথা ফ্যাশন । তিন কাঠা জমিতে যে বাড়ী করিয়াছে, সে-ও খানিকটা জমি ছাড়িয়া দিয়াছে বাগানের জন্য। তবে অনেকখানি জায়গা জুড়িয়া চিন্ময়ের মন্ত বড় বাড়ী । যত বড় নয়, নির্মাণ-কৌশলে তার চেয়ে বড় মনে হয়। তাকে দেখিয়াই চিন্ময় খুশী হইয়া বলিল, “মোহন ? আশ্চৰ্য্য করে দিলে যে !’ অভ্যর্থনার আন্তরিক তাতেই কয়েক বছরের আদর্শনের সঙ্কোচ অনেকখানি কাটিয়া যায়, দু’জনেই স্বস্তি বোধ করে। আরেক দিক দিয়া মনোমোহন। একটু বিস্ময়ও অনুভব করে। কিছুদিন যোগাযোগ না থাকিলে মনের মধ্যে বন্ধু ও কেমন বদলাইয়া যায়। দেখা হইলে বিস্ময়ের সঙ্গে মনে হয়, এতো ঠিক সে নয়! এতদিন মনের মধ্যে বন্ধু বলিয়া যাকে স্মরণ করিতাম ? বন্ধুর সর্বাঙ্গে চােখ বুলাইয়া চিন্ময় বলে, “তুমি সত্যি একটি আশ্চৰ্য্য মানুষ মোহন । যতবার গা থেকে এসেছ, গায়ের এতটুকু চিহ্ন তোমার কোথাও খুজে পাইনি। চুল ছোটছ, তা-ও এখানকাব সেলুনেব ছাট। তোমাদের ওখানে সেলুন আছে নাকি ? এতকাল গাঁয়ে থেকে এখানে আসবার সময় কি করে গায়ের সব ছাপ ঝেড়ে ফেলে দাও ?” মনোমোহন বলে, “পুকুর থেকে হাস যখন উঠে আসে-” ‘গায়ে জল থাকে না । কিন্তু পয়ে পাক লেগে থাকে। পাক না থাকলেও দেখলেই বোঝা যায় পুকুর থেকে উঠে এসেছে।” ‘গেয়ে বলেই হয়তো সছরে সেজেছি।” “সেজেছ কোথায় ? সাজলে তো ধরাই পড়ে যেতে-চেনা যেত সহরের डांशांझे ५agनCछ !' দুজনেই হাসে। দুজনেই পরস্পরের দিকে চাহিয়া গভীর আত্মপ্ৰসাদ অনুভব করে। দুজনেই ভাবে যে শিক্ষাদীক্ষা, চালচলন, আর রুচির দিক দিয়া প্ৰায় ভিন্ন রকম একজন মানুষের সঙ্গে অনায়াসে কেমন সহজ অন্তরঙ্গত গড়িয়া তুলিয়াছে! কিন্তু খানিক পরেই টের পাওয়া যায় দূরে সরিয়া থাকিলে বন্ধুর সঙ্গের সহজ অন্তরঙ্গতা বজায় থাকা এত সহজ নয় । “তারপর, খবর কি ?” চিন্ময়ের প্রশ্ন শুনিয়া মনোমোহন একটু দমিয়া যায়। অন্তরঙ্গতা বজায় আছে RVV)