?ikiუფში 90 বহু যত্নে ছড়ি তৈরি করিতেন। রাজ্যের বালক এবং যুবকগণ র্তাহার নিকট ছড়ির জন্য উমেদার হইত, তিনি দান করিতেন। ইহা ছাড়া বদন্যতার উত্তেজনায় ছিপ ঘুড়ি লাটাই নির্মাণ করিতেও তাহার বিস্তর সময় যাইত। যাহতে বহু যত্নে বহুকাল ধরিয়া চাচাছোলার আবশ্যক, অথচ সংসারের উপকারিতা দেখিলে যাহা সে পরিমাণ পরিশ্রম ও কালব্যয়ের অযোগ্য, এমন একটা হাতের কাজ পাইলে তাহার উৎসাহের সীমা থাকে পাড়ায় যখন দলাদলি এবং চক্রান্ত লইয়া বড়ো বড়ো পবিত্র বঙ্গীয় চণ্ডীমণ্ডপ ধূমাচ্ছন্ন হইয়া উঠিতেছে তখন বৈদ্যনাথ একটি কলম-কাটা ছুরি এবং একখণ্ড গাছের ডাল লইয়া প্ৰাতঃকাল হইতে মধ্যাহ্ন এবং আহার ও নিদ্রার পর হইতে সায়াহকাল পর্যন্ত নিজের দাওয়াটিতে একাকী অতিবাহিত করিতেছেন, এমন প্রায় দেখা যাইত । ষষ্ঠীর প্রসাদে শত্রুর মুখে যথাক্রমে ছাই দিয়া বৈদ্যনাথের দুইটি পুত্র এবং একটি কন্যা জন্মগ্রহণ করিল। গৃহিণী মোক্ষদাসুন্দরীর অসন্তোষ প্রতিদিন বাড়িয়া উঠিতেছে। আদ্যানাথের ঘরে যেরূপ সমারোহ বৈদ্যনাথের ঘরে কেন সেরূপ না হয়। ও-বাড়ির বিন্ধ্যবাসিনীর যেমন গহনাপত্র, বেনারসী শাড়ি, কথাবার্তার ভঙ্গি এবং চালচলনের গীেরব, মোক্ষদার যে ঠিক তেমনটা হইয়া ওঠে না,ইহা অপেক্ষ যুক্তিবিরুদ্ধ ব্যাপার আর কী হইতে পারে। অথচ একই তো পরিবার। ভাইয়ের বিষয় বঞ্চনা করিয়া লইয়াই তো উহাদের এত উন্নতি। যত শোনে ততই মোক্ষদার হৃদয়ে নিজ শ্বশুরের প্রতি এবং শ্বশুরের একমাত্র পুত্রের প্রতি অশ্রদ্ধা এবং অবজ্ঞা আর ধরে না। নিজগৃহের কিছুই তাহার ভালো লাগে না। সকলই অসুবিধা এবং মানহানি -জনক । শয়নের খাটটা মৃতদেহবিহনেরও যোগ্য নয়, যাহার সাতকুলে কেহ নাই। এমন একটা অনাথ চামচিকেশাবকও এই জীর্ণ প্রাচীরে বাস করিতে চাহে না এবং গৃহসজ্জা দেখিলে ব্ৰহ্মচারী পরমহংসের চক্ষেও জল আসে। এ সকল অত্যুক্তির প্রতিবাদ করা পুরুষের ন্যায় কাপুরুষজাতির পক্ষে অসম্ভব। সুতরাং বৈদ্যনাথ বাহিরের দাওয়ায় বসিয়া দ্বিগুণ মনােযোগের সহিত ছড়ি চাচিতে প্ৰবৃত্ত হইলেন। কিন্তু মীেনব্রত বিপদের একমাত্র পরিতারণ নহে। এক-একদিন স্বামীর শিল্পকার্যে বাধা দিয়া গৃহিণী র্তাহাকে অন্তঃপুরে আহবান করিয়া আনিতেন। অত্যন্ত গভীরভাবে অন্যদিকে চাহিয়া বলিতেন, “গোয়ালার দুধ বন্ধ করিয়া দাও।” দৈনাথ কক্ষে গুৰু থাকিয়া নম্রভাবে বলিতেন, “দুধটা-বন্ধ করিলে কি চলিবে । ছেলেরা খাইবে " গৃহিণী উত্তর করতেন, “আমানি।” আবার কোনোদিন ইহার বিপরীত ভাব দেখা যাইত- গৃহিণী বৈদ্যনাথকে ডাকিয়া বলিতেন, “আমি জানি না। যা করিতে হয় তুমি করো।” বৈদ্যনাথ স্নানমুখে জিজ্ঞাসা করিতেন, “কী করিতে হইবে।” স্ত্রী বলিতেন, “এ মাসের মতো বাজার করিয়া আনে।” বলিয়া এমন একটা ফর্দ দিতেন যাহাতে একটা রাজসূয় যজ্ঞ সমারোহের সহিত সম্পন্ন হইতে পারিত। r বৈদ্যনাথ যদি সাহসপূর্বক প্রশ্ন করিতেন ‘এত কি আবশ্যক আছে, উত্তর শুনিতেন, তবে ছেলেগুলো না সুপ্রিয়া ক্ষক এবং আমিও এই অহা ইল দূৰ কলা বসিয়া খুব সস্তায় সংসার চালাইতে রবে। ” এইরূপে ক্রমে ক্ৰমে বৈদ্যনাথ বুঝিতে পারিলেন ছড়ি চাঁচিয়া আর চলে না। একটা-কিছু উপায় করা চাই। চাকরি করা অথবা ব্যাবসা করা বৈদ্যনাথের পক্ষে দুরাশা। অতএব কুবেরের ভাণ্ডারে প্রবেশ করিবার একটা সংক্ষেপ রাস্তা আবিষ্কার করা চাই । একদিন রাত্রে বিছানায় শুইয়া কাতরভাবে প্রার্থনা করিলেন, “হে মা জগদম্বে, স্বপ্নে যদি একটা দুঃসাধ্য রোগের পেটেন্ট ঔষধ বলিয়া দাও, কাগজে তাহার বিজ্ঞাপন লিখিবার ভার আমি লাইব ।” সে রাত্রে স্বপ্নে দেখিলেন, তাহার শ্ৰী তাহার প্রতি অসন্তুষ্ট হইয়া ‘বিধবাবিবাহ করিব বলিয়া একান্ত পণ