পাতা:বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ গল্প.pdf/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

`ა ჯე (ჯ বিভতিভষণের শ্রেষ্ঠ গলপ রোজ রোজ সন্ধ্যায় প্রদর্শন এসে বটগাছটার তলায় বসে। রোজ সন্ধ্যার আগে দেবী পাহাড়ের গায়ের পথ বেয়ে নেমে আসেন, আবার সন্ধ্যার সময় ঘটকক্ষে ধাপে ধাপে উঠে চলে যান-সে রোজ বসে দেখে । এই রকম কিছ দিন কেটে গেল । একদিন প্ৰদৰ্শন মাঠের গাছতলায় চুপ ক'রে বসে আছে, সেই সময় দেবী জলাশয়ে নামলেন । সেও কি ভেবে ডোবার এদিকের পাড়ের দিকে দাঁড়াল-দেখলে দেবী ঘট নামিয়ে রেখে কুমদ ফল সংগ্রহে বড় ব্যস্ত । একটা বড় ফল জলাশয়ের এপারের দিকে এগিয়ে বেশি জলে ফটেছিল, তিনি সেটা সংগ্রহের জন্য খানিকটা ব্যথা চেণ্টা করবার পর চোখ তুলে অপর পারে প্রদর্শনকে দেখতে পেয়ে হঠাৎ একটি অপ্রতিভের হাসি হাসলেন-তার পর হাসিমখে তার দিকে চেয়ে বললেন-ফলাটা আমায় তুলে দৈবে ? --দিই, যদি আপনি এক কাজ করেন । --কি বলো ? -আমায় কিছ খেতে দেবেন ? আমি সমস্ত দিন কিছু খাইনি । দেবীর মাখে ব্যথার চিহ্ন দেখা দিল । বললেন—আহা !-তা। এতক্ষণ বলনি কেন ? --এপারে এস, থাকগে ফল । প্ৰদ্যমান জলে নেমে ফলাটা সংগ্ৰহ ক’রে ওপারে গেল । দেবী বললেন, তুমি মাঠের মাঝের ওই বড় গাছটার তলায় রোজ বসে থাক, frt ? প্ৰদ্যুম্ন তাঁর হাতে ফলটা দিয়ে বললে-হ্যাঁ, আমিও দেখি আপনি সন্ধ্যার সময় রোজই জল নিতে আসেন । দেবী হাসিমখে বললেন-ওই পাহাড়ের ওপরই আমাদের ঘর-এস তুমি আমার সঙ্গে—তোমায় খেতে দিইগে । হঠাৎ দেবী যেন কেমন একপ্রকার বিহবল-চোখে চারিদিকে চাইলেন । তারপর পাহাড়ের গায়ে কাটা ধাপ বেয়ে উঠতে লাগলেন, প্ৰদ্যমান পিছনে পিছনে চলল। পাহাড়ের উপর উঠে গিয়ে—একটি দরে বনো বাঁশঝাড়ের আড়ালে বেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন একটা ছোট কুটীর। দেবী বন্ধ দয়ার খালে ঘরের মধ্যে গিয়ে প্রদর্শনকে বললেন-এস । প্রদর্শন দেখলে কুটীরে কেউ নেই, জিজ্ঞাসা করলে—আপনি কি এখানে একা থাকেন ? দেবী বললেন-না । এক সন্ন্যাসী আমায় এখানে সঙ্গে ক’রে এনেছেন । তিনি কি করেন জানিনে, কিন্তু মাঝে মাঝে এখান থেকে চলে যান, পাঁচ-ছ দিন পরে আসেন। তুমি এখানে বসো । দেবী মাটির ঘাট পণ্য ক’রে তাকে যাবাগ পান করতে দিলেন, সবাদ অমাতের মতো, এমন সবাদ যাবাগ, সে পর্বে কখনো পান করেনি ! প্রদানের মনে হলো, যদি আচাৰ্য্য পণবন্ধনের কথা সত্য হয়, আর যদি সে সবচক্ষে যা দেখেছে তা ইন্দ্ৰজাল না হয়, তবে এই তো দেবী সরস্বতী তাঁর