তৃতীয় অধ্যায়। १७ মধুপান করিতে নিরীক্ষণ করিলে পথিকের অন্তঃকরণে কি অনিৰ্বাচনীয় ভাবেরই উদয় হয় । আতাপ-তাপিত ব্যক্তি যখন মলয় সমীরণের সুমন্দ সঞ্চারে সুশীতল-বকুল-মূলে উপবেশন করে, সেই সময় অলিবৃন্দ গুণগুণ ধ্বনিতে, কোকিল কোকিলা কুহুরবে, কি আশ্চৰ্য্য সুখে তাহাকে সুখী করিয়া থাকে! আবার বিষয়বিলাসী মনুষ্যগণ, দ্বিতল, ত্ৰিতল, কেহ কেহ ততোধিকতলা গৃহে মণিময় পর্যাঙ্কে কুসুমতুল্য সুকোমল শয্যায় উপবিষ্ট হইয়া, রতিরূপ কামিনী-সঙ্গে হাস্য কৌতুকে,তাহাদিগের নৃত্য ও অপাঙ্গ-ভঙ্গিমায় এবং সুরভি-মুখচন্দ্রমাম্রাণে, কি না সুখ সম্ভোগ করেন ? তাহার নিকটে শ্ৰেয়ের ভাবি সুখ কি সুখ বলিয়া গণ্য হইতে পারে ? কোন মুর্থ ভাবি দুল্লভ সুখপ্রত্যাশায় প্ৰত্যক্ষ সুলভ সুখ পরিত্যাগ করে ? শ্ৰেয়ঃ কহিলেন, বাচা মানুজ ! প্ৰেয়ঃ যাহা কহিলেন, তাহা যথার্থ বটে, কেননা আমার এ পথ অবলম্বন করিলে প্ৰথমতঃ কিঞ্চিৎ কষ্ট স্বীকার করিতে হয়, যেহেতু ইন্দ্ৰিয়সংযম ব্যতীত এ পথের পান্থ হইতে কেহ সমর্থ হয় না। শম-বিশিষ্ট হওয়া মনুষ্যের প্রকৃতিসিদ্ধ, কিন্তু মনুষ্য সকল ক্ৰমে কৃত্রিম ব্যবহারপ্ৰণালীর বশবৰ্ত্তী হওয়ায়, আপনি স্বভাবদোষে ইন্দ্ৰিয়-নিগ্ৰহ সহ্যু করিয়া, অমূল্য শান্তি-সম্পত্তি হইতে পরামুখ হইতেছেন। এক্ষণে সকলেই তাহাকে কষ্টসাধ্য বোধ করেন। কিন্তু যে মহাত্মা কুজন-সহবাস বিষবৎ পরিত্যাগ করিয়া ইন্দ্ৰিয়-বশীকরণ দ্বারা সাধুসঙ্গাবলম্বনে আমার এই নিত্যানন্দ পথের পথিক হইয়াছেন,
পাতা:বিজয়-বসন্ত - জলধর সেন.pdf/৭৯
অবয়ব