পাতা:সাহিত্য পরিষৎ পত্রিকা (পঞ্চদশ ভাগ).pdf/৩১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

NOe সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা ভোগেই সম্পত্তি । নিজের ধনে স০সার খরচ চালাইতে পারিলে সুখ আছে বটে, কিন্তু পরের ধন নিজের করিয়া খরচ করিতে পারিলে সুখ কম হয়, এমন নহে । ৪৫। ভাষার উদ্দেশ্য ভুলিয়া নিজের পরের বিচার করিতে বসিলে চিরকাল সেই বিচারেই যাইবে । কালের ধর্ম পরিবর্তন । কালের ধর্মে মানবেরই পরিবর্তন হইতেছে, ভাষার বিবৰ্ত্তন। তাহার ভাষা কোন ছার ? কোন মানবজানি অমর নহে, কোন ভাষাও নহে। নূতন জাতির রকৃতের মিশ্রণ ব্যতীত পুরাতন নিস্তেজ জাতি সতেজ হয় না । ভাষা ও নুতন শব্দ জীর্ণ ও আত্মসাৎ করিয়া বর্ধিত, পুষ্ট ও শকুতিশালী হইয়া ওঠে। কেবল মনে রাখিতে হইবে, যে ভাষা সাধারণ লোকে বুঝিতে পারে না, বিষয়ের নূতনত্বে নহে, ভাষার দোষে, তাহা দ্বারা জাতীয় উন্নতি হয় না। রস অভাবে গাছ নিস্তেজ হইয়া মারা যায়, জন সাধারণ হইতে দুরে থাকিলে ভাষাও তেমনই হয়। ভাষাও উপায় মাত্ৰ, উপেয় নহে । সৌন্দৰ্য-লালসা সকলেরই আছে, কিন্তু প্ৰাবল্য সুখকর নিতে । বপাশের গৌরব সেখানে সাজে, যেখানে আত্মশকতি বিকশিত করিবার সম্ভাবনা থাকে। বা0গলা ভাষায় হাজার হাজার সংস্কৃত শব্দ থাকিলেও সে ভাষা সংস্কৃত তইবে না । হাজার স্লেচ্ছ শব্দের স্পর্শ দোষ ঘটিলেও তাহ বিলাতী হইবে না ! ভাষায় জাতীয় ভাবে লুকায়িত থাকে । যতদিন সে ভাব থাকে, ততদিন সে ভাষার বিনাশ নাই । বাস্তবিক, বিবতনের নিয়মের বিরুদুধে দাড়ায়, এমন শকুতি কোন জীবের নাই, কোন জীব-সমাজের নাই, কোন সমাজবদধ জীবের নাই । যে যে নিয়মের শূণ্যখলে জীবসৃষ্টি-বাধা, সে সে নিয়মে সামাজিক ব্যাপােরও বাধা । মানুষ সুবিধা আঁসুবিধা বিলক্ষণ দেখে, বিলক্ষণ খোজে ৷ দুই দশ জন লেখক ও বকতা ধর্মঘট করিয়া দুই দশটা বিদেশী শবদ পরিহার করিতে না পারিলেও অন্য দশটা চলিয়া যাইবে । র্যাহারা অরণ্যের এক এক স্থানে কেবল একই গাছ দেখিয়াছেন, তাহারা বুঝিয়াছেন, কিরূপে সেই গাছ উড়িয়া আঁসিয়া জুড়িয়া বসিয়াছে, ‘দেশী’ প্ৰাণ ভয়ে দূরে সরিয়া গিয়াছে, সুযোগ আঁভাবে ক্ৰমশঃ হীনবীৰ্য্য হইয়া ও স০ খ্যায় কমিয়া ‘বিদেশীকে’ নিজের দেশ ভোগ দখল করিতে দিয়াছে । মানবজাতির বিবর্তনে নিউজিলা পডের মে-অরি জাতির আঁধুনিক অবস্থা জাজ্বল্যমান প্ৰমাণ । যাহা জাতিতে ঘটে, তাহা ভাষাতেও ঘটে । প্ৰথমে বিদেশী ভাষা। ভয়ে ভয়ে এখানে ওখানে বীজ নিক্ষেপ করে ; প্ৰথম প্ৰথম অনেক বীজ নষ্ট হয়, এক আঁধটা মাির-মার হইয়া টিকিয়া যায়। পরে আঁর দশটা আঁসিয়া জোটে, কতকগুলা নষ্ট হয়, দুই একটা তেজ করে। এখন এগুলোকে তাড়ায়, সাধ্য কার। ইহাদের দেখাদেখি এবং কতকটা সাহচর্যে আরও দশটা আঁটিয়া বসে। এখন জোট বাধিয়া বেড়ায়, লোক দেখিলে লুকায় না । দেখিতে দেখিতে লোকেও বিদেশী বলিয়া বুঝিতে পারে না, স্বদেশীর সাগগে আঁভিন্ন জ্ঞান করে। কালক্ৰমে সে সকল বিদেশী শব্দ স্বদেশী ভাষার শব্দরূপে এক আঁসনে এক প০াকৃতিতে বসিয়া যায়। এই রুপেই আঁনেক আঁাবী ও ফাসী শব্দ আঁামাদের নিত্য ঘর