পাতা:অক্ষয়-সুধা - অক্ষয়কুমার দত্ত.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য-সুশিক্ষিত ও অশিক্ষিত লোকের মুখের তারতম্য ৩৯ বলিয়া বিশ্বাস করে। পিতৃপিতামহাদি পূর্বপুরুষেরা যে প্রাচীন পথ অব লম্বন করিয়া চলিতেছেন, তাহাই সেই ব্যক্তির মতে সর্ব্বোত্তম। তাহা নিতান্ত যুক্তি-বিরুদ্ধ ও একান্ত অসঙ্গত হইলেও, তাহার অভিপ্রায় পরিবর্তন সহ নয়। স্বজাতির দোষ দর্শন ও অপর জাতির গুণাবলোকন-বিষয়ে তাহার নিমীলিত নেত্র উন্মীলিত হইবার নয়। তাহার মতানুসারে আমাদের। বুদ্ধিরও আর উন্নতি হইবে না, বিছারও আর উন্নতি হইবে না, ধর্মেরও আর উন্নতি হইবে না, সুথেরও আর উন্নতি হইবে না। তাহার অভিপ্রায় এই, আমরা সর্বাপেক্ষা অপকৃষ্ট যুগে জন্ম গ্রহণ করিয়াছি, অতএব উত্তরোত্তর অধোগতি প্রাপ্ত হইতে থাকিব করুণাময় পরমেশ্বর বিশ্বরাজ্য-পরিপালনার্থ যে সমস্ত মঙ্গলময় নিয়ম॥ সংস্থাপন করিয়া সর্বত্র প্রচার করিয়া রাথিয়াছেন, অশিক্ষিত ব্যক্তি সে সমুদায় অবগত নয়। তাহার অজ্ঞানাবৃত অন্তঃকরণ। অশিক্ষিতের সৰ্বস্থানেই নানা বিভীষিকা কল্পনা করে। ভূত, কু-সংস্কার প্রেত, পিশাচ ইত্যাদি অবাস্তবিক পদার্থ তাহার হৃদয় ক্ষেত্রে নিরন্তর বিচরণ করে॥ সে ব্যক্তি সদাই শঙ্কিত, নিয়তই উৎকণ্ঠিত। এবং কত প্রকার কুসংস্কারপাশে বদ্ধ হইয়া থাকে। ওভাওভ দিনক্ষণ। তাহার কতই আশঙ্ক। ও কতই উদ্বেগ উৎপাদন করে। বিহঙ্গ-বিশেষের স্বর-বিশেষই বা কত ত্রাস ও কত উৎকণ্ঠ উপস্থিত করে। আশ্চর্যের বিষয় এই যে, সমস্ত অসত্য বিষয়ে তাহার যেরূপ বিশ্বাস আছে, তাহা। কদাচ বিচলিত হইবার নয়; কিন্তু বিজ্ঞানের অনুশীলন দ্বারা যে সমস্ত যথার্থ বিষয় নিরূপিত হইয়াছে ও যে সকল অভিনব তত্ত্ব উদ্ভাবিত হইয়াছে, তাহাতে তাহার প্রত্যয় জন্মান মুকঠিন কর্ম্ম। লঙ্কাদ্বীপ মনুষ্যের নিবাস-ভূমি ও সকলেরই গম্য স্থান, ভূমণ্ডলের যে ভাগে আমাদিগের বাস, তাহার বিপরীত ভাগেও অন্য লোকের বসতি আছে, অবনিমণ্ডল শূন্তোতেই অবস্থিত, জন্তু