“অন্ধকূপ-হত্যা”-রহস্য ফলতায় লিখিত টুক সাহেবের বর্ণনা হইতে জানিতে পারা যায় তিনি ১৪৭ জনের কথা উল্লেখ করেন। এইরূপ উল্লেখ করিবার কারণ তিনি মিঃ ইয়ং লিখিত ও ড্রেকের নামে প্রেরিত পত্রখানি পাঠ করিয়া উক্তরূপ বর্ণনা করিয়াছিলেন। এই প্রকারেই ১৪৬ জন বন্দীর সংখ্যা প্রচারিত হইয়া পড়ে। কিন্তু এই সমস্ত প্রােপাগাণ্ডা করিয়াও ১১ মাস পরে যখন অন্ধকূপের এই উপাখ্যানটী বিস্মৃতির অন্ধকারে বিলুপ্ত হইতেছিল, ও সকলে এসব কথা আলোচনা করিতে নিরস্ত হইয়া গেলেন, এবং সরকারী কোন কাগজপত্রেও এই দুর্ঘটনার স্থান হইল না, তখন হলওয়েল স্বয়ং আর একখানি পত্র (তাহরি ৪র্থ পত্র) লিখিয়া যান। তিনি তখন ইংলণ্ড যাইতেছিলেন এবং পত্রখানি তিনি তাহার ইংলণ্ডের কোন এক বন্ধুর নিকট লিখিতেছেন। এরূপ লিখিবারই বা কারণ কি? ইংলণ্ডে পৌছিলেই ত বন্ধুর সহিত সাক্ষাৎ হইবে, এমতাবস্থায় পত্র লেখারই বা প্রয়ােজন কি ছিল? ইহার একমাত্র উদ্দেশ্য এই যে, এই ঘটনা সম্বন্ধে তিনি একটা বিশেষ বর্ণনা রাখিয়া যাইতে স্থিরসঙ্কল্প হইয়াছিলেন ; কারণ তখন ইহা সকলেই ভুলিতে আরম্ভ করিয়াছিল এবং ইহা ভাবিয়াই তিনি লিখিয়াছিলেন “l cannot allow it to be buried into oblivion.” অর্থাৎ “আমি ইহাকে বিস্মৃতির সহিত বিলুপ্ত হইতে দিবনা।” তিনি কেবল এইসব উপাখ্যান লিখিয়াই ক্ষান্ত ছিলেন মা; তিনি তাঁহার অন্ধকূপে মৃত বন্ধুগণের স্মৃতিরক্ষার্থে তাহাদের কবরের উপরে একটী ইষ্টক স্তম্ভ ( monument) নিৰ্মাণ করিয়া যান। কিন্তু এই মমেন্টের প্রতি কেহ লক্ষ্য না রাখায়, ইহা কিছুকাল পরে ভগ্নপ্রায় হইয়া উঠিয়াছিল, এমন সময়ে বজ্রপাতে ইহা ভূমিসাৎ হইয়া যায় এবং সর্বশেষে ভারতের গবর্ণর জেনারেল লর্ড হেষ্টিংসএর আদেশে ইহার শেষ ইষ্টকস্থূপরাশিও স্থানান্তরিত হয়। ১০৬
পাতা:অন্ধকূপ-হত্যা-রহস্য - মুজিবর রহমান.pdf/১১৪
অবয়ব