আমি কখনও কোনও অপরাধ করি নাই। সদা ধর্ম্মপথে আছি, নিয়ত তোমার প্রিয় কর্ম্ম ও হিতচিন্তা করিয়া থাকি। যে ফলোদ্দেশে ভ্রাতা আমাকে তোমায় দান করিয়াছেন, আমি মন্দভাগিনী, অদ্যাপি তাহা লাভ করি নাই। অতএব ভ্রাতা আমাকে কি কহিবেন? আমার জ্ঞাতিবর্গ মাতৃশাপে অভিভূত হইয়া আছেন। তাঁহাদের অভিলাষ এই, তোমার ঔরসে আমার এক পুত্র জন্মে। কিন্তু অদ্যাপি তাহা সম্পন্ন হয় নাই। তোমার ঔরসে পুত্র জন্মিলে তাঁহাদের শাপ বিমোচন হইবে। তাহা হইলেই তোমার সহিত আমার পাণিগ্রহণের উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয়। অতএব হে মহাত্মন! জ্ঞাতি কুলের হিতাকাঙ্ক্ষিণী হইয়া প্রার্থনা করিতেছি, প্রসন্ন হও। এই অব্যক্ত গর্ভ আধান করিয়া বিনা অপরাধে কি রূপে আমারে পরিত্যাগ করিয়া যাইতে চাই। স্বীয় সহধর্মিণীর এইরূপ কাতরোক্তি শ্রৰণ করিয়া মহর্ষি পঁহাকে এই যুক্তিযুক্ত উপযুক্ত বাক্য কহিলেন, হে সুভাগে! তোমার এই গর্ভে এক পরম ধর্ম্মাত্মা বেদবেদাঙ্গপারগ অনলতুল্য তেজস্বী ঋষি জন্মিয়াছেন। এই বলিয়া জরৎকারু পুনর্বার কঠোর তপস্যার অনুষ্ঠানে কৃতনিশ্চয় হইয়া অরণ্য প্রবেশ করিলেন।
পাতা:মহাভারত - উপক্রমণিকাভাগ - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/২০১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৪
মহাভারত।