পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঝাঁশির রাণী।
৪৯

তীরে, জঙ্গল-প্রদেশমধ্যে অবস্থিত ছিল। অগ্রগামী সৈন্যদল পলাইয়া আসিতেছে দেখিয়া, তাহারা একেবারে হতাশ হইয়া পড়িল। এদিকে স-হিউরোজ, তোপের সরঞ্জাম সঙ্গে লইয়া, পদাতিকদিগের পৃষ্ঠানুসরণ করিলেন। ত্যার সৈন্য, জঙ্গলে আগুন লাগাইয়া দিয়া, যাহাতে ইংরাজের আর অগ্রসর হইতে না পারে, তাহার চেষ্টা করিতে লাগিল। তথাপি সমস্ত বাধা অতিক্রম করিয়া ইংরাজ-সৈন্য বেটোয়া নদী পর্য্যন্ত অগ্রসর হইল। তাত্যাটোপের গোলন্দাজেরা তাহাদের উপর গোলা বর্ষণ করিতে লাগিল, কিন্তু তাহারা উচ্চভূমির উপর থাকায়, তাহাদিগের কোন ক্ষতি হইল না। পক্ষান্তরে, ইংরাজেরা যে গোলাবর্ষণ করিতেছিল, তাহাতে বিরুদ্ধ পক্ষের গোলন্দাজেরা নিহত হইতে লাগিল। তাহার পর, ইংরাজ অশ্বারোহী-সৈন্য সজোরে হল্লা করিয়া আক্রমণ করায়, তাহারা বড় বড় ২৪। ৩৬ পৌণ্ডের তোপ রণভূমির উপর ফেলিয়া পলায়ন করিল। এই সকল কামান অত্যন্ত ভারী বলিয়া, নদীতীরের বালুকার মধ্যে বসিয়া গিয়াছিল; সুতরাং গোলা, বারুদ প্রভৃতি উপকরণের সহিত এই সকল তোপ অনায়াসে ইংরাজদিগের হস্তগত হইল। শুধু তাহা নহে, ১৬ মাইল পর্যন্ত পলাতক শত্রুদিগকে অনুধাবন করিয়া তাহাদের সমস্ত যুদ্ধসামগ্রী ইংরাজেরা আপনার করিয়া লইল। এই বিজয়লাভে ইংরাজ- সৈন্যমধ্যে মহা উল্লাস পড়িয়া গেল এবং বিরুদ্ধ পক্ষের মধ্যে, সেই পরিমাণে, দুঃখ, ভীতি ও নৈরাশ্য এই তাপত্রয় আসিয়া উপস্থিত হইল। সংসারের গতিই এইরূপ!

“নীচৈৰ্গচ্ছত্যুপরি চ দশা চক্রনেমিক্রমেণ।”

অথবা এ কথাও বলা যাইতে পারে;

“ক্রিয়সিদ্ধি সত্ত্বে ভবতি মহতাং নােপকরণে।”